শ্রীপুর (মাগুরা) থেকে মোঃ সাইফুল্লাহ : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাগুরায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি তৎপরতা চোখে পড়ছে। নিজ দলের পক্ষে মাঠ পর্যায়ে চলছে প্রার্থীদের সরব পদচারনা। চলছে সভা-সমাবেশ, যুব সমাবেশ, গণসংযোগসহ নানা কার্যক্রম। দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সবুজ সংকেতের ইঙ্গিত দিচ্ছেন অনেকে। বিজয়ের পক্ষে দিচ্ছেন নানা যুক্তি। তবে

জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী প্রচার প্রচারনায় এগিয়ে অধ্যাপক এম বি বাকের।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও শালিখা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন এবং সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে মাগুরা-২ নির্বাচনি আসন গঠিত। যার সংসদীয় আসন নম্বর ৯২।

এ আসনে বিএনপি’র দু’টি গ্রুপ আছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন সাবেক মন্ত্রী কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী। অন্যটিতে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী সালিমুল হক (কাজী কামাল) ও ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী এই ৩ জন মাগুরা-২ নির্বাচনি এলাকায় সভা সমাবেশসহ গণসংযোগ করছেন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অন্যতম, সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যাপক এম বি বাকেরকে এ আসনের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরে রয়েছে তার সমান জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা। এ আসনে প্রার্থী হিসেবে আরো ঘোষিত হয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের জেলা আমীর মুফতি মোস্তফা কামাল ও কিংস পার্টির জেলা সভাপতি ইমরান নাজির।

বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩ জন প্রার্থীকেই হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করছেন দলীয় নেতাকর্মীসহ স্থানীয় ভোটাররা। কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ২০০৮ সালের নির্বাচনে মাত্র কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। নিতাই রায় চৌধুরীসহ তার সমর্থকরা মনে করেন এবার তাকে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষ মার্কা বিজয়ী হবে। আলোচিত আরেকটি নাম কাজী সালিমুল হক কামাল। তিনি ১৯৯৪ সালের উপ-নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এ আসনে ধানের শীষের বিজয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে আবার বিজয়ী হন। মাগুরা-২ নির্বাচনি এলাকা মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলাসহ সদরের ৪ ইউনিয়নে তার সমান জনপ্রিয়তা রয়েছে। তার অনুসারীরা মনে করেন তাকে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষ মার্কাকে বিজয়ী করতে পারবেন। অন্যদিকে বর্তমান যুব সমাজের মধ্যে জনপ্রিয় আর একটি নাম ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। নির্বাচনি এলাকায় তিনি দল মত নির্বিশেষে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। বিশেষ করে মাগুরার আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় তিনি শুরু থেকে এই পরিবারের পাশে থাকার পাশাপাশি এ পরিবারের সাথে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যোগাযোগ করিয়ে দেয়ায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। আসামীদের বিচারের রায় ঘোষণা পর্যন্ত তিনি আছিয়ার পরিবারকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। যা এখনো অব্যাহত আছে। আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রধান তার হাতে ধানের শীষ মার্কা তুলে দেবেন বলে যুবসমাজসহ অনেক নেতৃবৃন্দ মনে করেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অন্যতম সদস্য অধ্যাপক এম বি বাকেরকে জামায়াতে ইসলামী মাগুরা-২ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে গণসংযোগ, উঠান বৈঠক সভা - সমাবেশসহ বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনি কর্মকাণ্ড চলিয়ে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন ইসলামী জোটের প্রার্থী হলে এ আসন থেকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। অন্যদিকে সাবেক ছাত্রনেতা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাগুরা জেলা সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামালকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে পীর সাহেব চরমোনাই রেজাউল ইসলাম নোমানী ময়দানের জনসভায় জনতার সামনে পরিচয় করে দেন। মোস্তফা কালাম জানান, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে একটি সম্মানজনক ভোট পেয়েছিলেন সে কারণে ইসলামী জোট হলে তিনি হবেন এ আসনের ইসলামী জোটের প্রার্থী। কিংস পার্টি থেকে নির্বাচন করবেন জেলা সভাপতি ইমরান নাজির। তিনি বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন বলেন তিনি জানিয়েছেন।