বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশে ইসলাম, কুরআন-সুন্নাহ’র বিপরীতে শরিয়তবিরোধী কোনো আইন প্রণীত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির সঙ্গে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি এও বলেন, বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষার সম্প্রসারণ হোক, আমরা (বিএনপি) সেটা চাই। কিন্তু মাদরাসা শিক্ষাঙ্গণকে একটি নির্ধারিত দলীয় রাজনীতির অঙ্গণে পরিণত করতে চাই না। বিএনপি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, ইসলামপন্থি, সবার সাথে কথা বলেছে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, হেফাজতে ইসলামের নায়েবের সাথে দেখা করেছি, হাটহাজারী মাদরাসায় গিয়েছি, শর্ষিনা পীরের সাথে দেখা করেছি, আলিয়া লাইনের সমস্ত মুরুব্বি-নেতৃত্বের সাথে কথা বলেছি।

তিনি বলেন, উদ্দেশ্য একটা– বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠীকে আমরা একত্রিত করে, সমন্বিত করে, ঐক্যবদ্ধ করে এমনভাবে দেশ পরিচালনা করতে চাই, যেখানে বিভক্তি থাকবে না।

এদিকে গতকাল দুপুরে গুলশানে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, দক্ষিণ বা উত্তরপন্থী নয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বাংলাদেশপন্থী বা মধ্যপন্থী দল। বিএনপি গণমানুষের দল উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শিক পার্থক্য থাকলেও জাতীয় স্বার্থে সবাই যেন এক জায়গায় বসতে পারে সেরকম পরিবেশ সৃষ্টিতে কাজ করছে বিএনপি। এজন্য সকল পন্থার সাথে আলোচনা করা হচ্ছে।

সরকারের কাছে আরও বেশি প্রত্যাশা ছিলো জানিয়ে তিনি বলেন, নানা বাধাবিপত্তি উপক্ষা করে যা অর্জন করেছে এর বেশি হয়তো সম্ভব ছিল না। তবে জাতির আশা আরও বেশি ছিলো। সরকার যথাযথ সময় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিভিন্ন সময়ে ব্যর্থ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল, সেগুলো নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।

নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো চিঠি এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ জানিয়ে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, জাতি এর জন্যই অপেক্ষা করছিল। সংস্কার ও বিচারেও অগ্রগতি হয়েছে, বিএনপি সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতেও জাতিকে এগিয়ে নিতে প্রধান উপদেষ্টার ভিশনকে বিএনপি গ্রহণ করবে।

নির্বাচন পরিচালনার জন্য দ্রুত আইনকানুন প্রণয়ন হবে প্রত্যাশা এই বিএনপি নেতার। বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত সাংবিধানিক সংস্কার নির্বাচিত সরকার করবে। এছাড়া বর্তমানে পুলিশের স্ট্রাকচার রাতারাতি পরিবর্তনের সুযোগ না থাকলেও নির্বাচন পরিচালনায় তাদের রাখতে হবে। তবে মূল ভূমিকা রাখবে সেনাবাহিনী।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, জনগণই স্বচ্ছ নির্বাচন চায়। জনগণ যেখানে স্বচ্ছ নির্বাচন চায় সেখানে জনগণ ও প্রার্থীদের মানসিকতার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুমিকা গৌন হবে। জোটের বিষয়ে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত সমমনা যেকোনও রাজনৈতিক দলের সাথে জোট হতে পারে। তবে জোটের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।