আগামী নির্বাচনে গণরায় যাতে কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে সে জন্য পোলিং এজেন্টসহ কেন্দ্র দায়িত্বশীলদের ময়দানে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

তিনি আজ রাজধানীর পল্লবীর স্থানীয় একটি মিলনায়তনে ঢাকা-১৬ আসনে ভোট কেন্দ্র পরিচালক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্লবী জোন পরিচালক নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, ঢাকা-১৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কর্নেল (অব.) মোঃ আব্দুল বাতেন, উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগরী উত্তর মজলিসে শূরা সদস্য ও রূপনগর থানা আমীর আবু হানিফ, পল্লবী দক্ষিণ থানা আমীর আশরাফুল আলম, পল্লবী মধ্য থানা আমীর রইসুল ইসলাম পবন ও পল্লবী উত্তর থানা আমীর সাইফুল কাদের প্রমূখ।

সেলিম উদ্দিন বলেন,ড. ইউনূস সরকার জনগণকে সুষ্ঠু নির্বাচনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো তা এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে চলেছে। তারা জুলাই সনদকে আইনী ভিত্তি দেওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে জুলাই বিপ্লবের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে। তারা দেশ ও জাতির এ ঐতিহাসিক ও গৌরবোজ্জল বিজয় নানাভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। ফলে তারা এখন কালো শক্তিতে পরিণত হতে চলেছে। এরা আগামীতে যেনতেনভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু তাদের সে ষড়যন্ত্র কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। এদেশের মানুষ আর হাসিনা মার্কা নির্বাচন হতে দেবে না। নির্বাচনী কেন্দ্র জবরদখলের চেষ্টা করলে জুলাই বিপ্লবীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা সফলভাবে প্রতিহত করবে।

তিনি সংশ্লিষ্টদের নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে ইতিবাচক রাজনীতি ফিরে আসার আহবান জানান।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের কাছে করা অঙ্গীকার অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। কোন বিশেষ গোষ্ঠীর অঙ্গুলী হেলনে নির্বাচন অনুষ্ঠান বা সরকার পরিচালনা করলে চলবে না। সবকিছু করতে হবে জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে।

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারে প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার আঁতাত করে ‘সেইফ এক্সিট’ নেওয়ার চেষ্টা করলে জনগণ বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে তা প্রতিহত করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কেন্দ্র দখল, নমিনেশন কেনাবেচা ও কালো টাকা বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে। প্রয়োজনে অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। সনাতনী পদ্ধতিতে ভোট ডাকাতির নির্বাচন জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। তিনি আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে করতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, নির্বাচন বানচাল হলে দায়ী থাকবে পাথর বাহিনী ও চাঁদাবাজ বাহিনী। ইতিমধ্যেই হেলমেট বাহিনীর কাজ পাথর বাহিনী আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে হওয়ার কথা থাকলেও একটি মহল কেবল নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত।

তিনি সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা বা জনআকাক্সক্ষা পূরণ না করে কোনো বিশেষ দলকে ক্ষমতায় বসানো হলে অন্তবর্তিকালীন সরকার অবৈধ সরকারে পরিণত হবে। তিনি পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন যে, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণের বাংলাদেশ।