যারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চায় তারাই আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চায় উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ১৯৭১ সালের অর্জিত স্বাধীনতায় জাতি স্বাধীন ভূখন্ড আর লাল-সবুজের পতাকা পেয়েছে। এটি ছিল পাকিস্তানের শাসন-শোষণ থেকে মুক্ত হয়ে পৃথক রাষ্ট্র গঠনের স্বাধীনতা। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অর্জিত স্বাধীনতা এদেশের মানুষের কথা বলার, সভা-সমাবেশ করার, মুক্ত চিন্তার স্বাধীনতা। এটি ছিল ভারতীয় আধিপাত্যবাদের সেবাদাস আওয়ামী লীগের শাসন-শোষণ থেকে জাতিকে মুক্ত করার স্বাধীনতা। যারা ৫ আগস্টকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসেবে স্বীকার করে না, তারা ইতিহাসের পাতার সবচেয়ে নিকৃষ্ট অকৃতজ্ঞ। ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ ও তাদের শরীক ১৪ দল ব্যতিত এদেশের কোন মানুষ, কোন দল স্বাধীনভাবে চলতে পারেনি, কথা বলতে পারেনি, এমনকি নিজ ঘরে ঘুমাতেও পারেনি। এখন যারা মিডিয়ার সামনে, রাজপথে লম্বা লম্বা কথা বলতে পারছে তারা বিগত ১৫ বছর কোন স্বাধীনতা ভোগ করেছে প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে কি এরাই আওয়ামী লীগের সাথে গোপন আঁতাত করেছিলো? ছাত্র-জনতা যেই স্বাধীনতা এনে দিয়েছে এই স্বাধীনতা রক্ষা করা জাতির নৈতিক দায়িত্ব মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ডেমরা মধ্য থানার উদ্যোগে সুবিধা বঞ্চিত, অসহায়, দুস্থ ও ছিন্নমুল পথশিশুদের মাঝে ঈদ পোশাক বিতরণ পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও স্বাধীন দেশের নাগরিকদের ছিন্নমুল বলতে হচ্ছে এটা জাতির জন্য লজ্জার। বাংলাদেশে সম্পদের অভাব নেই উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, এদেশে সৎ, দক্ষ, যোগ্য, নৈতিকতা সম্পন্ন নেতৃত্বের অভাব ছিল। যার কারণে অযোগ্য, অদক্ষ, নৈতিকতাহীন, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসবাজ আর লুটেরা ব্যক্তিরা জনগণকে শোষণ করেছে। নিজস্ব মতবাদে দেশ পরিচালনা করে নিজেদের কল্যাণ করেছে। দেশ ও জাতির কোন কল্যাণ হয়নি। বিগত ১৭ বছর এদেশে আল্লাহর প্রশংসা ছেড়ে ব্যক্তি আর দলের প্রশংসা করতে দেখা গেছে। এখনো যারা আল্লাহর পথ ছেড়ে আওয়ামী লীগের মত একই পথে হাটবে, তাদের অবস্থা আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ হবে। জামায়াতে ইসলামী দলের কিংবা নেতার প্রশংসা চায় না। জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করতে চায়।

ইসলামী সমাজ গঠনের মাধ্যমেই দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, ইসলামী সমাজ গঠন হলে সমাজে ধনী-গরিবের বৈষম্য থাকবে না। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। কারণ ইসলামের বিধানই হচ্ছে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হলে সমাজ সুখী-সমৃদ্ধ হবে। আধুনিক ও কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের মূল উপাদান বৈষম্যহীন সমাজ গঠন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নৈতিকতা সম্পন্ন নেতৃত্ব। জামায়াতে ইসলামী একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ডেমরা মধ্য থানা আমীর মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাসান মোহাম্মদ শিবলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন এবং মহানগরীর কর্মপরিষদের সদস্য শাহীন আহমেদ খান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডেমরা মধ্য থানার কর্মপরিষদের সদস্য ডা. সাইদুল হক পাটোয়ারী, মো. এনামুল হক, মাওলানা মোস্তফা মোহাম্মদ আরিফ, শরিফ হুসাইন, শূরা সদস্য মাওলানা ফরহাদসহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি