জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের ‘শাহাদাত-বরণকারী’ উল্লেখ করে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন সাবেক আমীরে জামায়াত শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে মোহাম্মদ নাদিমুর রহমান।

রোববার (১৪ জুলাই) নিজের ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, জামায়াতের সেই নেতারা রাজনীতি বা অন্য কোনো কারণে পলায়নের পথ বেছে নেননি—এই গুণটাই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।

তিনি লিখেছেন, ‘২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করার পর জামায়াত শীর্ষ নেতাদের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷ কিন্তু হঠাৎ ২০১০ সালের কোরবানির সময় জামায়াতের এই শীর্ষ নেতারা হজ্জ করতে যাওয়ার একটি অনুমতি পান৷ তখন আমার একটু কৌতুহল জাগলো আমার শহীদ পিতা তিনি না গিয়ে সকলকে পাঠিয়ে দিলেন৷ কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম তিনি দলের প্রধান হওয়াতে দলের ইমেজের কথা চিন্তা করেই দেশ ছাড়লেন না এবং দলের পরবর্তী নেতৃত্ব যাতে ঠিক থাকে সেকারণে দলের অন্যান্য নেতাদের দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন৷ কিন্তু মজার ব্যাপার হলো দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা হজ শেষে দেশে ফিরে এলেন৷ শহীদ মীর কাসেম আলী নিশ্চিত গ্রেফতার হবে জেনেও দেশে ফিরে এসেছিলেন৷’

নাদিমুর রহমান আরও বলেন, ‘শুধু তাই নয়, জামায়াতের শাহাদাত বরণকারী শীর্ষ নেতাদের হাত ধরে উঠে আসা মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম সাহেব একটি বক্তৃতায় উনার গ্রেফতার হবার প্রেক্ষাপট বর্ণনা দিচ্ছিলেন এবং সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন গ্রেফতারের আগমুহূর্তে সকলে উনাকে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু তিনি ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্বরত ছিলেন এবং সেই অবস্থায় সংগঠনের ইমেজের কথা চিন্তা করে না পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ এমনকি ১৯৯৫-১৯৯৬ সালের দিকে কেয়ারটের সরকার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে ১৯৯৯-২০০০ সালের আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় আমার শহীদ পিতাকে দেখেছিলাম জামা-কাপড়, ব্যাগ গুছিয়ে সারারাত পুলিশের জন্য অপেক্ষা করতে যে পুলিশ গ্রেফতার করতে আসলে তাদের সাথে চলে যাবেন৷ আবার ২০১০ জুন মাসে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গ্রেফতারের আগেও আইনজীবীদের বলে রেখেছিলেন, "আমরা কিন্তু পালাতে পারবো না, তোমরা যদি জামিন নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারো করো৷’

তিনি আরও লেখেন, আর বিগত সময়ের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে নাকি কখনো পালায় না এই কথা বলা সত্যেও পরবর্তীতে দেখা সে দেশ থেকে পালিয়েছে৷ কিন্তু তিনবারের প্রধানমন্ত্রী আপষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ১/১১ সরকার শত চেষ্টা করেও দেশছাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছিল৷ সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম (রঃ) উনার ব্যাপারে একবার এমন মন্তব্য করেছিলেন, "বিএনপির যদি কোন পুরুষ থেকে থাকে তবে তিনি হলেন বেগম খালেদা জিয়া৷’