বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের মাসিক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৭টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দারসুল কুরআনের মাধ্যমে বৈঠক শুরু হয়। সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামের সঞ্চালনায় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। কেন্দ্রীয় সভাপতি ভার্চুয়ালি বৈঠকে যুক্ত হন।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে মে মাসের সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যালোচনা ও জুন মাসের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সভায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ এবং আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণসহ বিভিন্ন এজেন্ডা আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, কতিপয় ছাত্রসংগঠন সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোকে অস্থিতিশীল করতে পুরোনো ফ্যাসিবাদী কায়দায় অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এমন সংকট দূরীকরণে ছাত্রশিবিরকে ধৈর্য ও সতর্কতার সাথে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রকারীর ফাঁদে যেন পা না দিই; কারও উসকানি যেন আমাদের অস্থির করে না তোলে। মনে রাখতে হবে, আমাদের লক্ষ্য স্থির, গন্তব্য সামনে এবং যাত্রা সুদূরপ্রসারী।
জুন মাসকে আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানার্জন ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ মাস উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিতে জনশক্তিদের ভিশনারি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আদর্শের স্বাভাবিক বিপ্লবের জন্য সকল দায়িত্বশীল ও জনশক্তিকে স্বপ্ন দেখাার পাশাপাশি কার্যকর প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো পরিস্থিতিতেই আমাদেরকে আদর্শিক অবস্থান থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি পলিসি নির্ধারণ ও পদক্ষেপ গ্রহণে রাসূল (সা.)-এর আদর্শই আমাদের জন্য একমাত্র মডেল। আমাদের কথা, কাজ ও যুক্তি-তর্কের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের সৌন্দর্যকে উপস্থাপন করতে হবে।
বৈঠকে দেশব্যাপী দাওয়াত ও আত্মশুদ্ধিমূলক কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে “চলো গ্রামে যাই” কর্মসূচি পালন, কুরবানি উপলক্ষে শিক্ষার্থী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মাসিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন, পালাশী দিবস পালন এবং এসএসসি/দাখিল ফলপ্রার্থীদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স ও এ+ সংবর্ধনার প্রস্তুতিসহ ছাত্রকল্যাণমূলক নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এছাড়াও শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, ছাত্ররাজনীতির সংস্কার, ক্যাম্পাসসমূহে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন, জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদ এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের কার্যক্রমে অগ্রণী ভূমিকা পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পরিশেষে পারস্পরিক এহতেসাব ও সংশোধন এবং দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে বৈঠক সমাপ্ত হয়। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।