জামায়াত ইসলামীকে এক সময় বিরোধিতা করা হয়েছে। যারা জামায়াতের বিরোধিতা করেছিল তারাই এখন ইসলামী আন্দোলন করছে। বাংলাদেশে আজ জামায়াতে ইসলামী সর্ববৃহৎ ইসলামী দল। জামায়াত বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ইসলামী দল। জামায়াতে ইসলামী সূচনা থেকেই একদল আদর্শবান মানুষ তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত ইসলামী চমকপ্রদ কোন প্রোগ্রামের মাধ্যমে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মাধ্যমে রাজনীতি করেনা। জামায়াত রাজনীতি করে রাসুলের সাঃ দেখানো পথে। আমাদেরকে আরো অনেক দূর যেতে হবে। জামায়াত একটি জনপ্রিয় দল হলেও এখনো ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মতো অবস্থায় আসতে পারেনি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দিনব্যপি রুকন শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী জেনারেল কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও বরিশাল অঞ্চল পরিচালক অ্যাভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল এসব কথা বলেন। তিনি ইসলামের ইতিহাস থেকে বিভিন্ন বিপদ মুছিবতের কথা তুলে ধরেন। তিনি বিগত সরকারের আমলে জুলুম নির্যাতনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও জামায়াতে ইসলামী ৩ শ’ আসনে তার প্রতিনিধি দিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, শুধু আমাদের কৌশলের মাধ্যমে ইসলামের বিজয় হবে না, ইসলামের বিজয় আসতে হলে আমাদেরকে আল্লাহর দেখানো পথেই এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যদি আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে পারি তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে খেলাফতের দায়িত্ব দিবেন। সামনের কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হলে আমাদেরকে আরো অনেক অনেক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদেরকে কেউ ক্ষমতা দিয়ে দেবে না, আমাদেরকে ক্ষমতায় যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
অ্যাডভোকেট হেলাল বলেন, আমাদেরকে আখেরাত কি বাদ দিয়ে দুনিয়া সফলতা অর্জনের করার চেষ্টা করলে হবে না। আমরা যদি আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে পারি তাহলে দুনিয়ার সফলতাও অর্জন করতে পারব। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রোকন হচ্ছে একটি মান, একটি ত্যাগের ঘোষণা। বাংলাদেশর সকল মানুষের কাছে রোকন হচ্ছে গ্রহণযোগ্য একটি শব্দ। সমাজকে আলোকিত করার মূল জনশক্তি হচ্ছে সংগঠনের রোকন ভাই ও বোনেরা। শত নির্যাতনের পরেও মহান আল্লাহ জামায়াতে ইসলামীকে স্ব সম্মনে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এটা আল্লার একটি বড় দয়া। তিনি বলেন, কজন রোকনের জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য, সকল কাজকর্মসহ সবকিছুই আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হতে হবে। তিনি বলেন, রোকনদের আল্লাহর রঙে রঙিন হতে হবে। পরিবারগুলোকে হতে হবে আল্লাহ মুখি। জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হকের পরিচালনায় শিক্ষা শিবিরের সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও পিরোজপুর জেলা আমীর অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ। গতকাল সোমবার ৮টা ৪৫মিনিটে জেলা তাফহীমুল কুরআন আলিয়া মাদরাসা মিলনায়তন আমীর অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ এর সভাপতিত্বে তাফহীমুল কুরআন আলিয়া মাদরাসা মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দিনব্যাপী রুকন শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য এবং বরিশালয় মহানগর আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর।
বিশেষ অতিথি জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর “উপজেলা সংগঠন মজবুতি করনে রুকনের ভূমিকা” শীর্ষক বক্তব্য উপস্থাপনকালে সংগঠন পরিচালনায় এবং সংগঠন মজবুতিকরণ এর ক্ষেত্রে করে রুকনদের দায়িত্ব কর্তব্য ভূমিকার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে কুরআন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আল্লাহর আনুগত্য করতে হলে দুনিয়ায় রাসূলের আনুগত্য করতে হবে। এখন যেহেতু রাসূল সাঃ নেই তাঁর অবর্তমানে তাঁর দেখানো ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বে যারা আছেন তাদের আনুগত্য করতে হবে। এটা কোন ব্যক্তির আনুগত্য নয়, চেয়ারের আনুগত্য। যার কোন অভিভাবক নেই তার অভিভাবক শয়তান। সকাল ৮টা ৪৫মিনিটে জেলা আমীরে তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ এর উদ্বোধনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী শিক্ষা শিবির শুরু হয়। অতঃপর কুরআন থেকে দারস পেশ করেন, কেন্দ্রীয় শূরা ও অঞ্চল টীম সদস্য মাওলানা ফখরুদ্দিন খান রাযী। অনুষ্ঠানে এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, জেলা প্রচার মিডিয়া সংস্কৃতি সম্পাদক অধ্যাপক সোহরাব হোসেন জুয়েল, জেলা শূরা সদস্য ও সদর উপজেলা আমীর মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ। বিকেল পাঁচটায় ইহতেসাব (অনুষ্ঠান সম্পর্কে গঠনমূলক সমালোচনা) পর্বের মাধ্যমে শিক্ষা শিবির শেষ হয়।