বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, যারা জুলাই চেতনাকে স্বীকার না করে সংস্কারে বাধা প্রদান করতে চায় তারাই প্রকৃতভাবে নির্বাচন বানচাল করতে চায়। দুই একটি দল পিআর পদ্ধতি মানেন না, সংস্কার পদ্ধতিও মানেন না এবং আইনি ভিত্তিও তারা চান না তাহলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কিসের ভিত্তিতে করবেন। সেই শেখ হাসিনা আমলের নির্বাচন, দিনের ভোট রাতে দেওয়ার নির্বাচন, ২০১৪ সালের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন, ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন। এই নির্বাচন আর হবে না। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সেই অপশাসনের কবর রচিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়েছে। সেই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ আমলের নির্বাচন আর হবে না। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন চান, তাহলে সংস্কারকৃত আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন দেন। পুরনো পদ্ধতির নির্বাচন বাতিল করেন। বাংলাদেশেও পিআর পদ্ধতির নির্বাচন করতে হবে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) খুলনা-৩ আসনের খালিশপুর থানাধীন ওয়ার্ডের ভোটার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
৯নং ওয়ার্ড আমীর খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী বায়েজিদ এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি শহিদুল্লাহ’র পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, খালিশপুর থানা আমীর মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন। অন্যান্যের মধ্যে জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম, মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কাজী জিয়াউল ইসলাম, মোহাম্মদ হোসেন আলী, মাওলানা নজরুল ইসলাম, জাহিদ হাসান, মানিক মিয়া, ইলিয়াছ আলি, আরমান হোসেন, নূর আলী, আহাদ আলী, মেহেদী জামান, হাফেজ ইউনুস আলী, ইউনুছ আলী মন্টু, শ্রমিকনেতা নাছির উদ্দীন, হাফেজ নাছরুল্লাহ, যুব নেতা বাদশা মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য প্রার্থী আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর সরকারের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রকে নতুন পথ দেখাবো। বাংলাদেশ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাবে। এই আন্দোলন সংগ্রামে যারা জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন তাদের হত্যাকারীদের বিচার করা হবে। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে যারা ধ্বংস করে দিয়েছে সেই দুর্নীতিবাজদের বিচার করা হবে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশে আমরা ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেব। দেশের মানুষ উৎসবমূখর পরিবেশে ভোট দান করবে। আগামী ফেব্রুয়ারীতে জাতীয় নির্বাচনে মানুষ উৎসব পালন করবে। আগামী নির্বাচন উপলক্ষে সরকার সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে, বিচার কার্যক্রমসহ নির্বাচনী টাইমলাইন ঘোষণা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করার ৫ দফা দাবি জামায়াতে ইসলামীর একক দাবি নয়, পুরো জাতি ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন চায়। ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন জাতিকে উপহার দেয়া সম্ভব। জাতি এমন একটি নির্বাচনের জন্য উম্মুখ হয়ে আছে। বিগত ১৭ বছর জাতি নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ কখনো দিনের ভোট রাতে করেছে, কখনো ১৫৪ আসনে বিনা ভোটে সরকার গঠনের নিশ্চয়তা নিয়েছে, কখনো আমি-ডামি নির্বাচন করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। লীগের পতনের পর জাতি নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের আশা করছে। অন্তবর্তী সরকার জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে বলে জাতি বিশ্বাস করে। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে ইনসাফ ও ন্যায়ের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় সমর্থন দিতে তিনি খুলনা-৩ সংসদীয় এলাকার জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।