শহীদি রক্তের বদৌলতে ফিলিস্তিন মুক্ত হবে আকসা মুসলমানদেরই থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান। গতকাল সোমবার বিকাল ৫টায় নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ উত্তর গেটে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবশে ও মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন করেন।

মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নির্মূলের নামে গাজায় আগ্রাসন চালায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এরপর থেকে এ ভূখণ্ডে চলছে হত্যাযজ্ঞ। নির্মম গণহত্যা চালানো হয় গাজার প্রতিটি অংশে। এতে প্রাণ হারায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। হত্যাকাণ্ডের তালিকায় রয়েছে গণমাধ্যম, ত্রাণ ও স্বাস্থ্যকর্মী। ইসলাইলি বোমায় নিহতের লাশ আকাশে উঠে জমিনে পড়তে দেখা যায়। রবিবার রাতভর ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৪৬ জন। এর মধ্যে জাহা শহরে বাবা ও মেয়েসহ প্রাণ হারিয়েছে ২১ জন। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের একটি আশ্রয় শিবিরে হামলায় মারা গেছে কমপক্ষে ছয়জন।

তিনি বলেন, গাজায় ইহুদিদের গণহত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘণ্য ও নিকৃষ্টতম যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ। এই অপরাধে বিশ্ব সন্ত্রাসী রাষ্ট্র অবৈধ ইসরাইলের পৃথিবীর মানচিত্রে অস্তিত্বের কোনো নৈতিক অধিকার নাই। বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ও মানবতার পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা পালন করার জন্য আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে।

সভাপতির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ না হলে ফিলিস্তিন মুক্ত করা সম্ভব নয়। মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি না হওয়ার পেছনে কারণ হলো, দেশগুলোতে ইসলামপন্থি সরকার না থাকা। যদি দেশগুলোতে ইসলামপন্থি সরকার থাকত, তাহলে মুসলমানরা একতাবদ্ধ হওয়ার সুযোগ লাভ করত। এসময় নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর; ফিলিস্তিনে হামলা কেন জাতিসংঘ জবাব চাই; গাজাতে হামলা কেন জাতিসংঘ জবাব চাই; জিহাদ জিহাদ জিহাদ চাই জিহাদ করে বাঁচতে চাই, বিশ্ব মুসলিম ঐক্য কর ফিলিস্তিনকে মুক্ত কর, দুনিয়ার মুসলিম এক হও জিহাদ করো, বিপ্লব বিপ্লব ইসলামী বিপ্লব; ইসরাইলের আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও; জেগে ওঠো মুসলিম রক্তে ভাসে ফিলিস্তিন; ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করো করতে হবে; অবিলম্বে ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধ কর,করতে হবে; সন্ত্রাসী ইসরায়েল বয়কট, বয়কট ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয় এবং এসব স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড ও ফ্যাস্টুন বহন করা হয়। সমাবেশ শেষে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় মিছিলে পরবর্তী বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর ড. আ. জ. ম. ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস ও মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, কর্মপরিষদ সদস্য ডা. মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান প্রমুখ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা মমতাজুর রহমান, আমির হোছাইন, হামেদ হাসান ইলাহী, চট্টগ্রাম ৮ সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. আবু নাসের।