বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। জনগণ গণভোটে যে মতামত দেবে, জামায়াতে ইসলামী সেটাই মেনে নেবে। তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি সারা বিশ্বে একটি জনপ্রিয় নির্বাচন পদ্ধতি, যেখানে প্রতিটি ভোটের যথাযথ মূল্যায়ন হয়। একজন ভোটারের মতামতও অবমূল্যায়িত হওয়ার সুযোগ নেই।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে সারাদেশেই গণমিছিলের কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

রাজধানীতে গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে অধ্যাপক পরওয়ার আরও বলেন, জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি না দিলে ফ্যাসিবাদী চক্র জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করে দেবে। এতে দুই সহস্রাধিক শহীদের আত্মদান এবং পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি আহত-পঙ্গুত্ববরণকারী জুলাই যোদ্ধাদের স্বপ্ন ভেস্তে যাবে। তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোনো দলই একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হলে নির্বাচন দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের কবলে পড়বে। কালো টাকা ও অস্ত্রের জোরে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর উত্থাপিত ৫ দফা দাবি কোনো দলীয় এজেন্ডা নয়, বরং জাতির ভবিষ্যৎ ও জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষার প্রশ্ন। দেশ ও জাতির স্বার্থে ৫ দফা গণদাবি পূরণ করতে আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ঐক্যের বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ জাতিকে কেউ পরাজিত করতে পারে না।

তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। অন্যথায় পরিণতি হবে রাতের ভোটের সিইসি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতোই। অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান উপদেষ্টা একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও ঐকমত্য কমিশনের প্রধান। কিন্তু কিছু উপদেষ্টা দলীয় আনুগত্যের কারণে তাকে বিব্রত করছেন। তাদের নিরপেক্ষতা রক্ষায় রাজনৈতিক আনুগত্য ত্যাগ করতে হবে।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, যারা আমাদের ভাইদের হত্যা, গুম ও নির্যাতন করেছে, তাদের বিচার অবশ্যই হতে হবে। জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী এ দেশের জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে। ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকাতে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানের পথ চিরতরে রুদ্ধ হবে। তিনি আরও বলেন, যারা এই দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী শক্তিকে শক্তিশালী করতে চায়। জুলাই যোদ্ধারা দেশের মাটিতে আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা হতে দেবে না।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন মোল্লা এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমানসহ মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেইটে সমাবেশ শেষে একটি বিশাল গণমিছিল গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, বিজয়নগর হয়ে কাকরাইল গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে কেন্দ্রীয়, মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের নেতৃবৃন্দসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

সিলেট ব্যুরো : জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্বাধীনতার পর জাতির জন্য সর্বোচ্চ অর্জন। এই অর্জনের জন্য ২ হাজার ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন ও ৩০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। এই রক্তের ঋণ পরিশোধের জন্য জাতি পরবর্তী সরকারের জন্য অপেক্ষা করবে না। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন হবে। এর আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এই দাবি শুধু জামায়াতের নয়, দেশপ্রেমিক জনতার। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবি করায় বলা হচ্চে আমরা নাকি নির্বাচন চাইনা। অথচ এক বছর আগেই ২০০ আসনে আমরা প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছি। বড় দলটির একটি আসনে এখানো ১০ জনেরও বেশি প্রার্থী কাজ করছেন। প্রার্থী ঘোষণা করে দেখেন না ৩য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। কেউ কেউ পিআর বুঝেন না। সময় গেলে এটাও বুঝবেন। কেয়ারটেকার পদ্ধতির মতো পিআর পদ্ধতিও এদেশে কার্যকর এবং গ্রহণযোগ্য হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানসহ জামায়াত ঘোষিত ৫ দফা দাবি মেনে নিন। অন্যথায় ফের গণআন্দোলনের সুচনা হবে।

তিনি শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বাদ জুমআ নগরীর কোর্ট পয়েন্টে জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত গণমিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে কোর্টপয়েন্ট থেকে বিশাল গণমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টর প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সমাপ্ত হয়। মিছিলে সিলেট মহানগর ও বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড-ইউনিটের হাজার হাজার জনশক্তি অংশ নেন।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে, সহকারী সেক্রেটারি জাহেদুর রহমান চৌধুরী ও মাওলানা ইসলাম উদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গণমিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ আসনে (মহানগর ও সদর) জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান।

বক্তব্য রাখেন- জেলা নায়েবে আমীর সিলেট-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, মহানগর নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, সিলেট-৩ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সিলেট মহানগর সভাপতি এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর সভাপতি শাহীন আহমদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির সভাপতি তারেক মনোয়ার প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের আরো বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য ঐকমত্য কমিশন গঠন করেছে। সেই কমিশন টানা ৮ মাস ধরে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সাথে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করেছে। কমিশনের অনেক প্রস্তাবের মধ্যে ৮৪টি প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। এছাড়া সংবিধানে জামায়াত প্রস্তাবিত জুলাই অধ্যাদেশ জারির ব্যাপারেও সবাই একমত হয়েছেন। এরজন্য গণভোটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব গণভোটের আয়োজন করা।

তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ভুল বুঝানো হচ্ছে। অথচ পিআর পদ্ধতি হলে বেশি ভোট কাস্ট হবে। মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে। জনগণের ভোটের সঠিত মূল্যায়ন থাকবে। তাই আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। স্বৈরশাসকের সাথে থাকা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। নির্বাচন সকল দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জন আকাক্সক্ষা পূরণ হবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, জনগণ ভিন্ন সময় বিভিন্ন দলকে নির্বাচিত করে তাদের শাসন দেখেছে। এবার তারা দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করতে চান। জামায়াত ঘোষিত ৫ দফা দাবি মেনে নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন কর”ন। অন্যথায় ছাত্র-জনতার আবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। একটি দলের নেতার পিআর বুঝেন না। কেয়ারটেকারের মতো পিআরও বুঝবেন। এজন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করা হয়েছে। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হওয়ার সুযোগ দেয়া হবেনা।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট মহানগর আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্লোগান শুনেছি। দলের চেয়ে দেশ বড়, ব্যক্তির চেয়ে দল। কিন্তু যখনই স্বার্থে আঘাত পড়ে যায় তখন সবকিছুর উপরে ব্যক্তি বড় হয়ে যায়। এই জাতিকে আর ধোকা দেয়া যাবে না। যেনতেন নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার দিন শেষ। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন ও জামায়াত ঘোষিত ৫ দফা দাবি মেনে নিয়েই সরকারকে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন বাংলাদেশ আজ রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতার দাপট, এবং নির্বাচন প্রহসনের এক ভয়াবহ দুষ্টচক্রে আবদ্ধ ছিল। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে একটি নতুন, ন্যায়ের বাংলাদেশ গঠন। এই নতুন বাংলাদেশের সূচনা হবে ‘জুলাই সনদ’-এর বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। এই সনদে আমরা যে কাঠামোগত ও রাজনৈতিক সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছি, তা দেশের জনগণের আকাক্সক্ষা, ন্যায়ের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক নীতি এবং প্রকৃত গণতন্ত্রের সোপান। তাই নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি অপরিহার্য।

গতকাল শুক্রবার বাদে জুমা চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের গণমিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত এই রাষ্ট্রক্ষমতা, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক মাঠ কিছু সুবিধাভোগী দলের জন্য সংরক্ষিত থাকবে, ততদিন এ দেশে কখনও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হবে না। আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি চাই, যেখানে সব দল সমান সুযোগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা বিশেষ করে জাতীয় পার্টি ও তথাকথিত ১৪ দল নির্বাচনে দলীয় ক্ষমতা পেছনের দরজা দিয়ে সংরক্ষণ করে রেখেছে। এরা হচ্ছে সেই দালাল শ্রেণি, যারা জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে বছরের পর বছর এই অবৈধ ক্ষমতার অংশীদার। দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষায় এই দলগুলোকে নিষিদ্ধ করা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ব্যর্থ ও জনবিচ্ছিন্ন। তাই আগামী নির্বাচন অবশ্যই ‘পিআর পদ্ধতি’ অর্থাৎ চৎড়ঢ়ড়ৎঃরড়হধষ জবঢ়ৎবংবহঃধঃরড়হ-এর ভিত্তিতে হতে হবে, যাতে জনগণের প্রকৃত ভোটের প্রতিফলন সংসদে ঘটে। এটাই প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা যেখানে জনমতের অনুপাতে সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। জুলাই সনদে আমরা এই নির্বাচন পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়েছি, যা এ দেশের রাজনৈতিক বৈষম্য ও নির্বাচনী জালিয়াতির অবসানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন এ দেশে যারা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র হত্যা করেছে, ভোটের অধিকার হরণ করেছে, বিরোধীদের উপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে সেই একই গোষ্ঠী এখন আবার নির্বাচনের নামে নতুন ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের জবাব জনগণ রাজপথে দেবে। জামায়াতে ইসলামী জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে, আমাদের দাবি ন্যায্য, আমাদের পথ শান্তিপূর্ণ কিন্তু লক্ষ্য অনড়: ইনসাফ ও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা।”

বক্তব্য শেষে মুহাম্মদ শাহজাহান জনগণকে আহ্বান জানান, আসুন, আমরা সকলে মিলে নতুন বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাই ইনসাফভিত্তিক, নৈতিকতা-সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক এক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য। জুলাই সনদকে আমাদের জাতীয় চুক্তি হিসেবে গ্রহণ করে আইনি ভিত্তি দেওয়া হোক, এটাই আজকের ঐক্যবদ্ধ জনতার ঘোষণা

চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস ও নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায়

এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য, নগর জামায়াতের সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম ২ ফটিকছড়ি আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ মোবারক হোসেন, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম ১০ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. আবু নাছের, চট্টগ্রাম ১১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শফিউল আলম প্রমুখ।

গণমিছিল পূর্বসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাম্মদ নজর”ল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের আকাক্সক্ষা একটি বৈষম্যহীন সমাজ কায়েম করে শহীদ আবু সাঈদসহ দু’সহস্রাধিক শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার লক্ষেই ছাব্বিশের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। ৫ দফা গণদাবি তথা জুলাই সনদ, পিআর সিস্টেম, লুটেরা-খুনিদের দৃশ্যমান বিচার, ফ্যাসিস্টের দোসর জাপাসহ চৌদ্দ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। ১৯৭৩ সালের ভোট ডাকাতি, হোন্ডা-গুণ্ডা নির্বাচন কেন্দ্র ঠাণ্ডার নির্বাচন, গৃহপালিত বিরোধী দলের একদলীয় শাসন, মাগুরা স্টাইল ও পনের ফেব্রুয়ারি স্টাইলের নির্বাচন, ফেমা (ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং এলায়েন্স) সহ নানা ষড়যন্ত্রের ছিয়ানব্বই নির্বাচন, ২০০৮ এর ডিজিটাল কারচুপির অস্বাভাবিক পরিসংখানের নির্বাচন, ভোটার বিহীন চৌদ্দের নির্বাচন, নিশিরাত বা ডামি-আমি খেলার নির্বাচন বাংলাদেশে আর করতে দেয়া হবে না। ছোট বড় প্রতিটি দলকে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দেয়া এবং প্রত্যেক ভোটারের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় পিআর সিস্টেমের কোন বিকল্প নেই।

সমাবেশ শেষে গণমিছিল চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ থেকে শুরু হয়ে কাজীর দেউড়ি মোড় হয়ে জামাল খানে এসে চট্টগ্রাম মহানগরী ভারপ্রাপ্ত আমির পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজর”ল ইসলাম বক্তব্যের মাধ্যমে মিছিল শেষ হয়।

গণমিছিল ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন নগর কর্মপরিষদ সদস্য, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, ফখরে জাহান সিরাজি সবুজ প্রমুখ।

রাজশাহী ব্যুরো: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে জুলাই সনদের ভিত্তিতে এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে রাজশাহীতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে গণকপাড়া মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সমাবেশে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, যারা ফ্যাসিস্টের মতো ১৭ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায় তারা পিআর বুঝতে চায় না। এদেশে আমরা আর কোনো ফ্যাসিস্টকে দেখতে চাই না। আমরা চাই সকল ভোটারের মূল্যায়নে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন। এর কোনো বিকল্প নেই। এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে মনোনয়ন বাণিজ্য, রাজনীতিতে পেশীশক্তির ব্যবহার, রাজনৈতিক দৃর্বৃত্তায়ন এবং কালো টাকার প্রভাব কমে যাবে। রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর এ্যাড. আবু মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডল ও সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সরকারের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর রাজশাহী সদর-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডাক্তার মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল ও মো. শাহাদৎ হোসাইন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, মহানগরী জামায়াতের শিল্প ও বাণিজ্য সেক্রেটারি অধ্যাপক এ কে এম সারওয়ার জাহান প্রিন্স, যুব বিভাগের সেক্রেটারি সালাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

খুলনা ব্যুরো : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক খুলনা-৬ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, যে লক্ষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আগামীতে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পুরোপুরি বিলুপ্তির পাশাপাশি পিআর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মতভাবে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরছি। জনগণ আমাদের গণমিছিলে অংশগ্রহণ করে প্রমাণ হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর দাবি জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন ছাড়া দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।

শুক্রবার গতকাল বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক শহীদ হাদিস পার্কে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে সমাবেশ ও গণমিছিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা নায়েবে আমীর ও খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মহানগরী সেক্রেটারি ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমীর ও খুলনা-১ নং আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা শেখ মো. আবু ই্উসুফ, খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, জেলা সেক্রেটারি ইলিয়াস হোসাইন, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক। অন্যান্যের মধ্যে খুলনা মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, মহানগরী অফিস সেক্রেটারি মিম মিরাজ হোসাইন, এডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর জি এম শহিদুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আমীর আব্দুল্লাহ আল মামুন, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর, দৌলতপুর থানা আমীর মুশাররফ আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমীর মুনাওয়ার আনসারী, লবণচরা থানা আমীর মোজাফফর হোসেন, খুলনা সদর থানা সেক্রেটারি আব্দুস সালাম, সোনাডাঙ্গা থানা সেক্রেটারি মাওলানা জাহিদুর রহমান নাঈম, খালিশপুর থানা সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, দৌলতপুর থানা সেক্রেটারি মাওলানা মহিউদ্দীন, আড়ংঘাটা থানা সেক্রেটারি শেখ মো. তুহিন, হরিণটানা থানা সেক্রেটারি এডভোকেট ব ম মনিরুল ইসলাম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সহ-সভাপতি এস এম মাহফুজুর রহমান ও কাজী মাহফুজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের কাছে করা অঙ্গীকার অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। কোন বিশেষ গোষ্ঠীর আঙ্গুলী হেলনে নির্বাচন অনুষ্ঠান বা সরকার পরিচালনা করলে চলবে না। সবকিছু করতে হবে জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার আঁতাত করে ‘সেইফ এক্সিট’ নেওয়ার চেষ্টা করলে জনগণ বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে তা প্রতিহত করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কেন্দ্র দখল, নমিনেশন কেনাবেচা ও কালো টাকা বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে। প্রয়োজনে অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। সনাতনী পদ্ধতিতে ভোট ডাকাতির নির্বাচন জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। তিনি আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে করতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

সমাবেশে শেষে গণমিছিলটি নগরীর শহীদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরীঘাট মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড়, সঙ্গিতা মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। গণমিছিলে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ব্যানার-প্লাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার জনতা অংশ নেয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়নগঞ্জ) সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দীর্ঘদিনের দাবি পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন করার এবং জুলাই বিপ্লবে নির্বিচারে ছাত্র জনতা হত্যা ও গুম খুনের সঠিক বিচারে জুলাই সনদ অত্যাবশ্যক। এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বাদ জুম’আ শহরের মিশন পাড়া মোর থেকে এক বিশাল গণ মিছিল শুরু হয়। উক্ত গণ মিছিলে নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর ও নারায়নগঞ্জ ৪ আসনের জামায়াতে ইসলামীর এমপি প্রার্থী মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, সংগ্রামী নারায়ণগঞ্জবাসী আজকে পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সহ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে এদেশে যেনো আর কোনো অন্যায়, জুলুম, নির্যাতনে হাসিনার মতো ফ্যাসিজম না আসতে পারে। আমরা বলতে চাই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতার উপর অন্যায়, জুলুম নির্যাতনের বিচার করতে হবে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে পিআর পদ্ধতিতে। আমরা বার বার বলতে চাই জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আমরা বলেছি ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতি, জুলুম, নির্যাতের বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। কিন্তু বর্তমান সরকার অনেক গুলো বিষয় নিয়ে কাজ করার কথা বলেও এখনো পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য যে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড দরকার যা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

গণমিছিলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ। তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচানের দাবিতে সমস্ত মুসলিম জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এটা এখন গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই বর্তমান সরকারের উচিত গণমানুষের দাবি দ্রুত মেনে নেওয়া।

এই সময় গণমিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এইচ এম নাসির উদ্দিন, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আবু সাঈদ মুন্না, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ও প্রচার-মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুল মোমিন, সিদ্ধিরগঞ্জ উত্তর থানা আমীর মাওলানা মোস্তফা কামাল, পশ্চিম থানা আমীর মাহাবুব হোসেন, পূর্ব থানা আমীর আলী হাসান রুম্মন প্রমুখ এছাড়াও মহানগরী ও থানা জামায়াতের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

বরিশাল অফিস : জনরায়কে গুরুত্ব দিয়ে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন মেনে নিন : অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মু.বাবর জনরায়কে মূল্যায়ন করে অবিলম্বে পিয়ার পদ্ধতিসহ জামায়েত ইসলামী ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগর আমির অধ্যক্ষ মাওলানা জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর। ১০ অক্টোবর শুক্রবার পাঁচ দফা দাবি আদায় উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরী টাউন হলে আয়োজিত গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বাংলাদেশে কোন ভালো নির্বাচন হয়নি,এসব নির্বাচনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জনরায় কে প্রতিফলন করতে পারিনি এজন্য জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচনে বিরোধিতা করছে। পিআর হলে ১০ টা হুন্ডা ২০ টা গুন্ডার নির্বাচন আর হবে না এই জন্য কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী পিআর মেনে নিতে চাচ্ছে না। মানবাধিকার ভোটের অধিকার ও দেশের জনগণের মতামত অনুযায়ী দেশ চালানোর জন্য এই ছাত্রজনতার জীবন দিয়েছেন, সেই জনরায়কে উপেক্ষা করে সরকার কোন ষড়যন্ত্র মূলক নির্বাচনের দিকে হাঁটলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। জনগণের আন্দোলনে প্রতিষ্ঠিত সরকারের কাছে দাবি আদায় করতে রাস্তায় নামতে হবে এটা আমরা প্রত্যাশা করিনা, এই সরকারের কাছে জনগণের মতামত গুরুত্ব পাবে এবং জনগুরুত্বপূর্ণ এই পাঁচ দফা দাবি সরকার মেনে নিবে। এই দাবি আদায়ে আগামী ১২ তারিখ রবিবার প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বরিশাল শহরের আপমর জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার, মহানগর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাহমুদ হোসাইন দুলাল, সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার মিজানুর রহমান, মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ, তারিকুল ইসলাম, বরিশাল মহানগর শিবিরের সেক্রেটারি আব্দুর রহমান সুজন ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম।

আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা শফিউল্লাহ তালুকদার, শামীম কবির, জাফর ইকবাল, মাহফুজুর রহমান আমিন, কাউনিয়া থানা আমির মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ শেষে বিশাল গণমিছিলটি টাউন হল চত্বর থেকে শুরু হয়ে সদর রোড, ফজলুল হক এভিনিউ, চকবাজার, লাইনরোড হয়ে আবার টাউন হলে এসে সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে গাজীপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামী শুক্রবার সকালে বিশাল গণমিছিল ও সমাবেশ করেছে। সকালে টঙ্গীর শালিকচূড়া এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে স্টেশন রোড বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

মিছিলের নেতৃত্ব দেন গাজীপুর-৬ আসনের ঘোষিত জামায়াত প্রার্থী, তুরস্কের গাজী ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, নায়েবে আমীর মুফতি খায়রুল হাসান, মো. হোসেন আলী, সালাহ উদ্দিন আইয়ুবী, মহানগর সেক্রেটারি আ স ম ফারুক, সহকারী সেক্রেটারি আফজাল হোসাইন, পশ্চিম থানা জামায়াতের আমীর আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, পূর্ব থানা আমীর নজরুল ইসলামসহ মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহানগর আমীর অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, “দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটাতে একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাধান হলো জুলাই সনদের আইনভিত্তিক বাস্তবায়ন এবং পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা। জনগণের ভোটাধিকার ফেরানো এখন জাতীয় প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা রাষ্ট্রে ন্যায়, জবাবদিহি ও সুশাসনের ভিত্তি স্থাপন করতে চাই। গাজীপুর-৬ আসনে অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমানের মতো সৎ, যোগ্য ও প্রজ্ঞাবান প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রমাণ করেছে যে, তারা যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে। জনগণ এখন পরিবর্তন চায়, আর সেই পরিবর্তনের অগ্রদূত হবে জামায়াতে ইসলামী।”

গাজীপুর-৬ আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান বলেন, “টঙ্গীতে যে সমস্যাগুলো আছে, তা আমরা কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছি। শ্রমিকরা দীর্ঘ সময় কাজ করেন, কিন্তু জীবনের মান খুবই নিম্নমানের। আমরা নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন এবং স্বাস্থ্যসেবা-সমৃদ্ধ গাজীপুর গড়তে চাই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার।”

গণমিছিল ও সমাবেশ শেষে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ, ব্যানার-পোস্টার প্রদর্শন করা হয়, যা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা ও আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করে। উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানান, জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে অন্যায়, দুঃশাসন ও ভণ্ডামির রাজনীতি পরাজিত হবে।

রংপুর অফিস ঃ জুলাই সনদের ভিত্তিতে পি আর পদ্ধতিতে আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভাবে আয়োজনের দাবিত গতকাল ১০ই অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরী মাঠ থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। শেষে নগরীর শাপলা চত্বরে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও রংপুর মহানগরী শাখার আমীর উপাধ্যক্ষ মাওলানা এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামর রংপুর জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, জামায়াতের রংপুর মহানগর সেক্রেটারি আনোয়ার”ল হক কাজল অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ পুর্ব এবং পরবর্তি সমাবেশে বক্তাগন বলেন, নির্বাচনের আগেই বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের জুলুম, নির্যাতন, গনহত্যা ও দূর্নীতির দৃশ্যমান বিচার অবশ্যই করতে হবে। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের সহায়তায় ১৫ বছর ধরে জাতির উপর জুলুম-নির্যাতন এবং দেশের সম্পদ লুট আর মানুষ খুন করেছে। এজন্য একই সাথে ফ্যাসিষ্ট স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। ফ্যাসিষ্টের বির”দ্ধে দেশের র্স্বাথে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

এ সময় সমাবেশে ও গণমিছিলে জামায়াতে ইসলামর রংপুর মহানগর সহকারী সেক্রেটারি রায়হান সিরাজী ও আল আমীন হাসান, বাংলাদেশ স্থল বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী অঞ্চল পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাশেম বাদল, শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের রংপুর মহানগর সভাপতি এডভোকেট কাওছার আলী, কোতয়ালী থানা আমীর মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, পেশাজীবি সাংগঠনিক থানা-২ এর আমীর অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, পরশূরাম থানা আমীর এডভোকেট মাহবুব আলম, মাহিগঞ্জ থানা আমীর মোহাম্মদ মোহসিন অলী, হাজীরহাট থানা আমীর বেলাল হোসেন, তাজহাট থানা আমীর এডভোকেট রবিউল ইসলাম, সদর উপজেলা আমীর মাওলানা মাজাহার”ল ইসলাম, কোতয়ালী থানা আমীর মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা শাহজাহান সিরাজ, ইসলামী ছাত্রশিবির রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল হুদা অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

কুমিল্লায় : পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদ ঘোষণাসহ পাঁচ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে গণমিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগরী। সমাবেশ শেষে মিছিলটি টাউন মাঠ থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে টমচমব্রীজ মোড়ে গিয়ে শেষ করে।

গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরীর আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ এতে সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা অঞ্চল টিম সদস্য আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর মোহাম্মদ শাহজাহান এডভোকেট, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল মতিন, মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর একেএম এমদাদুল হক মামুন। মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি মু. মাহবুবর রহমান এর পরিচালনা গণমিছিল পূর্বসমাবেশে বক্তারা বলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ভুল বুঝানো হচ্ছে। অথচ পিআর পদ্ধতি হলে বেশি ভোট কাস্ট হবে। মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে। জনগণের ভোটের সঠিত মূল্যায়ন থাকবে। তাই আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। স্বৈরশাসকের সাথে থাকা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। নির্বাচন সকল দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জন আকাক্সক্ষা পূরণ হবে না। এবং অবিলম্বে কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণা দাবি জানান বক্তারা।

গণমিছিল ও সমাবেশ এসময় অংশ গ্রহন করেন, মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মু. কামারুজ্জামান সোহেল,কাউন্সিল মোশাররফ হোসাইন, নাছির আহম্মেদ মোল্লা, কুমিল্লা মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি হাসান আহম্মেদ,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির সভাপতি হাফেজ মাজারুল ইসলাম,মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি নাজমুল হাসান পঞ্চায়েত।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য কাজী নজির আহম্মেদ, অধ্যাপক জাকির হোসেন, দেলোয়ার হোসাইন সবুজ সহ অনেকে।কর্মসূচিতে দলের হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন। এসময় এই মুহূর্তে দরকার পিআর আর সংস্কার, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন, দিতে হবে দিয়ে দাও, জামায়াত-শিবির জনতা, গড়ে তোলো একতা স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কাজী দ্বীন মোহাম্মদ আরো বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা দাবি জানান। তিনি আগামী নির্বাচনে কুমিল্লা ৬ আসনে সদর -সদর দক্ষিণ উপজেলার সর্বস্তরের জনগণকে ন্যায়ের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিতে নগরবাসীকে আহবান জানান। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

ময়মনসিংহ : পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদ ঘোষণাসহ পাঁচ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে গণমিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ময়মনসিংহ মহানগর।

গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪ টায় ময়মনসিংহ নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে মিছিল পূর্ব সমাবেশে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ্ কায়সার এর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ময়মনসিংহ মহানগরীর আমীর ও ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা কামরুল আহসান এমরুল। তিনি বলেন, জুলাই সনদ এদেশের মানুষের আকাক্সক্ষা, ভালোবাসা ও প্রত্যাশার। আরেকটি স্বৈরাচারী সরকার যেন আবার চেপে বসতে না পারে সেজন্য জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে পিআর পদ্ধতিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে হবে। সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য জামায়াতের এ আন্দোলন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কর্মসূচিতে দলের অসংখ্য নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। এসময় এই মুহূর্তে দরকার পিআর আর সংস্কার, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন, দিতে হবে দিয়ে দাও, জামায়াত-শিবির জনতা, গড়ে তোলো একতা স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামী, ময়মনসিংহ জেলা শাখার আমীর আব্দুল করিম। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে। অবাধ, সুষ্টু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চরপাড়া মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও ফুলবাড়িয়া সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী কামরুল হাসান মিলন, ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ও ত্রিশাল সংসদীয় আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী আসাদুজ্জামান সোহেল, সহ-সেক্রেটারি আনোয়ার হাসান সুজন, মাহবুবুল হাসান শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নেত্রকোনা-৪ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী আল হেলাল তালুকদার, শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ডাঃ আব্দুল আজিজ, হায়দার করিম, খন্দকার আবু হানিফ, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারী প্রমুখ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।