ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নারী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেক করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি (পটুয়াখালী-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী) ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, হযরত খাদিজা (রা.) যেভাবে ইসলামের বিজয়ের জন্য মহানবী (সা.) এর পাশে দাঁড়িয়েছেন একইভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে নব্য ফ্যাসিবাদী দলকে প্রতিহত করে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে নারী সমাজকেই সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে পরবর্তী প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম এমনকি সবশেষ জুলাই বিপ্লবে নারীদের আত্মদান, ত্যাগ চিরস্মরণীয়। নারী সমাজকেই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অতীতের মতো সাহসী ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে।

শনিবার (৮ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (মহিলা বিভাগ) বাউফল উপজেলার শাখার সদস্য (রুকন) ও ছাত্রী প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘একটি দলের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির কারণে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে’। তাদের চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে যখন এদেশের নারী সমাজ সোচ্চার হয়ে উঠছে তখন তারা নারীদের ওপর হামলা করছে! নারীদের ওপর তাদের হামলার চিত্র ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের শাসনামলকেও হার মানিয়েছে। তারা নারীদের ধর্ম চর্চায়ও বাঁধা দিচ্ছে। নারীরা ইসলামের দাওয়াত দিতে গেলে তালীম করতে চাইলে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। ‘নিজ দলের চেয়ারপার্সনের নির্বাচনী আসনে অন্য দলের প্রচারণা তারা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে’ যেটি শেখ হাসিনাও করেনি। শেখ হাসিনা নিজের সঙ্গে ডামি প্রার্থী রেখে নির্বাচন করেছিল। কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমানের দল আজ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচারণা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারতো না।

ড. মাসুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও নারীদের অধিকার, নিরাপত্তা কিংবা সুরক্ষা নিশ্চিত হয়নি। নারী সমাজ ঘরে, বাহিরে, কর্মক্ষেত্রে কোথাও নিারপদ নয়। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে দলমত, ধর্ম-বর্ণ জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত হবে। নাগরিকের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। নারী সমাজ ঘরে, বাহিরে ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা লাভের পাশাপাশি নিজের অধিকার ও মর্যাদা লাভ করবে। জামায়াতে ইসলামী একটি ‘ইসলামিক কল্যাণ রাষ্ট্র’ গঠন করতে চায়। যেই রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চা করতে পারবে। পৈত্রিক সম্পত্তির জন্য বোনদেরকে মানুষের দ্বারে-দ্বারে ঘুরতে হবে না, আদালতের বারান্দায় দাঁড়াতে হবে না। ইসলামী বিধান অনুযায়ী পিতার সম্পত্তিতে কন্যার অংশ কন্যাকে তার ভাইয়ে বুঝিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে। ভাই-বোনের সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃত্বের। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের ঘরে বন্দি করে রাখবে না। রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য নারী-পুরুষ প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে এবং অংশীদার হবে। নারীদের কর্মমূখী প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ‘প্রত্যেক নারীকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা হবে’, ঘরে বসেই নারী উপার্জনে সক্ষম হবে। নারীদের কারো উপর নির্ভরশীল হতে হবে না। ইসলামী বিধান মতে নারীর স্বাধীনতা, অধিকার, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে। তাই ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

বাউফল উপজেলা আমীর মুহাম্মদ ইসহাক মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ৫ শতাধিক মহিলা জামায়াতের সদস্য (রুকন) ও ছাত্রী প্রতিনিধি মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন।