নিউইয়র্ক থেকে এইচ এম আকতার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক সংসদ সদস্য ডা.সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। এটি যদি রাজনীতিবিদরা বুঝতে ভুল করে তাহলে চওড়া মূল্য দিতে হবে। দেশে যদি কারচুপির নির্বাচন হয় তাহলে আবারও রাজপথে নামবে জনগণ। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জামায়াত আপোষহীন।

গতকাল শক্রবার বিকেলে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় নিউইয়র্কে এস্টোরিয়ার ওয়াল্ড মেনর হল রুমে কোয়ালিশন অব বাংলাদেশী আমেরিকান এসোসিয়েশন ( কোবা) আয়োজিত এক নাগরিক সমবর্ধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন,ড: মীর শওকত আলী, সাংবাদিক কাজী শামসুল আলম, স্পোর্টস এলায়েন্স এসোসিয়েশন সভাপতি মনির আহমেদ,আমেরিকার খেলাফত মজলিসের সভাপতি মুফতি লুৎফর রহমান কাশেমি,কুমিল্লা সমিতির সাবেক সভাপতি আলমগীর, হাজি মফিজুল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী মশিউর রহমান প্রমুখ।

ফাইন্যান্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড: নকিবুর রহমান বলেন, জামায়াতের পরিচয়ে এভাবে বক্তব্য দিতে পরবো আমি কখনো মনে করিনি। আল্লাহ আমাদের প্রচেষ্টা কবুল করেছেন।আমরা মানুষের কাছে যেতে পারছি।মানুষ আস্হা রেেখছে।নারীরা আমাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের আত্নবিশ্বাসী হতে হবে।অহংকারী হওয়া যাবে না।আল্লাহ কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

ড: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আজকের সমাবেশ বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।প্রবাসে এতো বড় সমাবেশ আমাকে আনন্দিত করেছে। মুসলমানরা কখনো পরাজয় মেনে নেয়নি।এসময় হাজি শরিয়ত উল্লাহ এবং তিতুমীরের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন আমরা তাদের উত্তরশূরি। ঘোষণা পত্রে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন সংযুক্ত করা হয়নি। এটি আমাদের ঐতিহ্য।আমরা স্বাধীনতা পেলেও তার সুফল পাইনি।নেতৃত্বের কারণেই আমরা সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছি। জুলাই আন্দোলনের ইতিহাস সারা বিশ্বে একটি স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।এরকম অংশগ্রহণমূলক বিপ্লব কমই হয়েছে। কিন্তু আজ এই অর্জন বিবর্ণ হচ্ছে। আমরা এবার আর প্রতারিত হবো না।আমাদের অর্জন যেখানে বাধাপ্রাপ্ত হবে সেখানে প্রতিরোধ। সোনার বাংলার স্লোগান শুনেছি। আমরা ছয় দফা আঠারো দফা শুনেছি কিন্তু মুক্তি হয়নি।অনেকের ধারনা ভারত ছাড়া দেশ চলবে না।এটি ঠিক না।আমরা বাংলাদেশী।আমরা কাউকে ভয় করি না।কারো কাছে মাথা নত করি না। আমরা চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে চাই।

তিনি আরও বলেন,সময় বুঝেই আমাদের কাজ করতে হবে। মালদ্বীপ ভারত ছাড়া পারলে আমরাও পারবো। এ সময তিনি রাসুল স: এর রাষ্ট্র কাঠামো উল্লেখ করে বলেন,আমাদের তা দেখিয়েছেন। আমাদের সাথে মুসলিম অমুসলিম সব দেশের সম্পর্ক থাকবে।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু লাভ হবে না।ডাকসু তার প্রমান। আল্লাহ সকল ষড়যন্ত্র ধ্বংস করে দিবেন। তরুণরা আজ জেগে উঠেছে। তরুণরা আজ আমাদের চেয়ে অনেক জ্ঞানী।

পুলিশের হাতে আটকের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন,তারা আমাদের অনেক টর্চার করেছে। কোন লাভ হয়নি। আমরা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না।কোন কিছুর বিনিময়ে আমাদের আল্লাহ রাস্তা থেকে এক পাও পিছু হটাতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, রাসুল সাঃ খাবার না পেয়ে পেটে পাথর বেধে ছিলেন। পেটে ক্ষুধা নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। আবুবকর রা এবং ওমর রা উদাহরণ টেনে বলেন, আমরা তাদের বংশধর। এটি আমাদের অহংকার।

তিনি বলেন,জামায়াতই প্রথম প্রবাসিদের ভোটাধিকার দাবি করেন। কিছু দাবি আদায় হয়েছে। বাকি দাবিও আদায় হবে।প্রবাসিদের জন্য ইনভেস্টম্যান ব্র্যারো করতে হবে। স্বাধীনতার প্রশ্নে কারো সাথে আপোষ করব না। ভারত যদি কখনো আমাদের উপর হামলা করে তখন আমরা প্রথম প্রতিহত করবো।আওয়ামী লীগ তো তাদের প্রতিহত করবে না।

তিনি বলেন, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনকে যদি ধন্যবাদ জানাই তাহলে তাকে খাটো করা হবে। তাদের অনেক ভূমিকা রয়েছে ।তারা কোন কিছু পাওয়ার জন্য করেনি।দেশের জন্য করেছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। বাংলাদেশ মানুষ আরেকটি কারচুপির নির্বাচন চায় না।হাসিনা মার্কা নির্বাচন চায় না। নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। দেশের মানুষ তা মানবে না।এটি রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে।

প্রযোজনীয় সংস্কার করতে। অবাধ নির্বাচন করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো বসতে হবে। কেউ যদি কারচুপি করে তাহলে তা শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কারচুপি হলে আবারও রাস্তায় নামবো। আমি ডামি আর রাতের ভোট দিনে করতে দিব না। মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে এটি বুঝতে ভুল করলে তার চওড়া মূল্য দিতে হবে।