বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া দেশের জনগণ নির্বাচন চায় না, মানে না। সবাই নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। যেই নির্বাচনের প্রেক্ষিত রচনা করলো তুরুণরা রক্ত দিয়ে। ৩৬ দিন যুদ্ধ করে ৫ আগস্ট বিজয় আসলো। সেই জুলাই বিল্পবের আইনি ভিত্তি দিয়ে যদি নির্বাচন করা না হয়, তরুণদের আকাক্সক্ষাকে পদদলিত করা হবে। এ জন্য জামায়াত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায়। যা অবশ্যই দিতে এবং গণভোটের আয়োজন করতে হবে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও শহরের সালন্দর মাদরাসা মিলনায়তনে আসন্ন নির্বাচনে দায়িত্বশীল গণের কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা আব্দুল হালিম আরো বলেন, যারা আজকে গণভোটের বিরোধীতা করছেন, সেসব ভাইদের ভূলে গেলে চলবে না যে, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান গণভোট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গণভোটের মাধ্যমে তৎকালীন পরাজিত শক্তির রেখে যাওয়া সকল অপশক্তির ও নিয়মের বিরুদ্ধে জয়লাভ করে তিনি ক্ষমতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। কাজেই গণভোট দিতে হবে। আসুন সবাই আমরা সবাই গণভোটের দাবিতে সোচ্চার হই। এবং গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ এবং পিআর পদ্ধতির পক্ষে যদি জনগনের রায় আসে আমরা মেনে নেব। রায় না আসলেও জনগণের রায় মেনে নেবো।
তিনি বলেন, এ নির্বাচনে যারা অংশ গ্রহণ করে তারা সবাই জিততে চায়। আমরা মনে করি নির্বাচনটা প্রতিযোগিতা মূলক হওয়া উচিৎ। তবে হিংসা জিঘাংসার নির্বাচন হবে না। দশটা হুন্ডা, বিশটা গুন্ডা আর চল্লিশটা ডান্ডার নির্বাচন আর এদেশে হবে না। ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ এ যে জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। এখন জনগণ ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। ডাকসু, জাকসু ভোট দিয়ে তরুণরা হাতের দাগ দেখিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছে যে, আমরা ভোট দিয়েছি। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে যেভাবে তরুণরা তাদের মতামত দিয়ে, আগামী সংসদ নির্বাচনেও টেকনাফ তেঁতুলিয়া পর্যন্ত দেশের জনগণ ভোটদানের মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করার জন্য অপেক্ষা করছে। ১৮ থেকে আশি সকল বয়সের ভোটারদের অংশ গ্রহণে একটি উৎসব মূখর পরিবেশে নির্বাচন হবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি। জনগণের মতামতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী যারাই নির্বাচিত হয়ে আসবে তারাই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলে, আঠারো বছর আমরা জামায়াতের নেতাকর্মীরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি।
আর এখন একটি দল জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, গালি দিচ্ছে। গালির রাজনীতি করে দেশবাসিকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। মনে রাখবেন যারা গালি দিচ্ছে, তাদের ভোট কমছে। ওরা যত গালি দিবে, যত অপপ্রচার করবে জামায়াত ততবেশি এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আসন্ন নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনের পরিচালক ও ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারী অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন আহাম্মদ এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য আব্দুর রশিদ, সাবেক ঠাকুরগাঁও জেলা আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম, বর্তমান জেলা আমির অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারী ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলা সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলমগীর।
দিনাজপুর-৬ আসন : সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ দীর্ঘদিন থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ হতে বঞ্চিত। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী ও ফ্যাসিস্ট বিরোধীদের বিজয়ী করতে মানুষ বদ্ধপরিকর। দেশের জনগণ দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন, সামাজিক ন্যায়বিচার, ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ।
তিনি আরো বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন দেশের জনগণ মানবে না।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ মানবিক ও মডেল নতুন বাংলাদেশ গঠনে আমীরে জামায়াত ডা শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে প্রস্তুত। সে লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীর সকল নেতাকর্মীকে নির্বাচনী কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
দিনাজপুর-৬ সংসদীয় আসনের পরিচালক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা সেক্রেটারি মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হকের সভাপতিত্বে গতকাল রোববার, সকাল ৯ টা থেকে দিনব্যাপী নির্বাচনী দায়িত্বশীল কর্মশালা বিরামপুর আদর্শ হাইস্কুল হলরুমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
আসনের সদস্য সচিব আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও দিনাজপুর জেলা আমীর অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, সাবেক জেলা আমীর ও দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি প্রার্থী মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
নির্বাচনী কর্মশালায় জেলা কর্মপরিষদ সদস্য, জেলা ইউনিট সদস্য, উপজেলা আমীর ও সেক্রেটারি, পৌরসভা, ইউনিয়ন আমীর, সভাপতি, সেক্রেটারি, ইসলামী ছাত্রশিবিরের দক্ষিণ জেলা নেতৃবৃন্দ, মহিলা বিভাগের দায়িত্বশীলাগণ, শ্রমিক বিভাগ, যুব বিভাগ, উলামা বিভাগ ও পেশাজীবী বিভাগের দায়িত্বশীলগণ উপস্থিত ছিলেন।
একই দিনাজপুর-৫ আসনের নির্বাচনী দায়িত্বশীলদের কর্মশালা ফুলবাড়ী উপজেলার জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম। আসন পরিচালক সাইদুল ইসলাম সৈকতের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, জেলা আমীর অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান, সাবেক জেলা আমীর আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হক ও আসনের সদস্য সচিব হাফেজ মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।