গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৬ মার্চ) ভোরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা হলেন—কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন প্রিন্স (২৫), ছাত্রদল কর্মী হৃদয় মিয়া (২৪), তরিকুল ইসলাম (১৯), আরাফাত রহমান রিয়ান (১৯), চয়ন মিয়া (১৮) ও সিহান হোসেন (১৮)। হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে (মামলা নং ১৭, তারিখ ১৬/০৩/২৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৫ মার্চ) জুমার নামাজের খুতবায় বালীগাঁও উত্তরপাড়া বাইতুল আমান জামে মসজিদের ইমাম সুদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর জেরে শনিবার বিকেলে ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলজার হোসেনের ওপর প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হন।

বিকেলে আহত গোলজার হোসেন চিকিৎসা নিতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে তার প্রতিপক্ষের লোকজনও সেখানে উপস্থিত হয়। সন্ধ্যায় ছাত্রদল নেতা প্রিন্সের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা ও কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে হাসপাতালে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, রোগী ও স্বজনরা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যান, এবং কর্মরত চিকিৎসাকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতে উভয় পক্ষ থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ রোববার ভোরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছাত্রদল নেতা প্রিন্সসহ ছয়জনকে আটক করে।

এদিকে, গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল ৯টার দিকে তাদের সমর্থকরা থানার প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তারা সেখানে অবস্থান নিলেও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং তারা সরে যায়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ইমরান খান বলেন, "হাসপাতালে হামলার ঘটনায় পুলিশকে জানানো হলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং তদন্ত শুরু করে। হামলার কারণে চিকিৎসাসেবা সাময়িকভাবে ব্যাহত হলেও বর্তমানে তা স্বাভাবিক রয়েছে।"

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, "হাসপাতালে হামলার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"