আজ রাজপথে থাকবে ৮ দলের নেতাকর্মীরা

আগামী ১৬ নভেম্বরের মধ্যে পাঁচ দফা দাবি না মানলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতসহ সমমনা ৮ দল। গতকাল বুধবার দলগুলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচি ঘোষণা করেন জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমীর মুজিবুর রহমান।

এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় প্রচার এবং মিডিয়া বিভাগের প্রধান এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের আমীর আব্দুল বাসিত আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মুহাম্মাদ আব্দুল জলিল, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, সিনিয়র নায়েবে আমীর আব্দুল মাজেদ আতহারী, মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার ও অর্থ সচিব মোঃ আনোয়ারুল কবির, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন-এর মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, শূরা সদস্য মাওলানা মোহাম্মদ তৌহিদুজ্জামান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র (জাগপা) ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি এডভোকেট এএসএম আনোয়ারুল হক চান ও সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক নাঈম।

আন্দোলনরত ৮ দলের পক্ষ থেকে আন্দোলনের নিম্নোক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

প্রথম দিনের কর্মসূচি হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে ৮ দলের নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের জনশক্তিসহ দেশব্যাপী রাজপথে অবস্থান করবে। একই সাথে তারা ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।

১৪ নভেম্বর শুক্রবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে দেশব্যাপী জেলা/মহানগরী পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

১৬ নভেম্বর রোববার আন্দোলনরত ৮ দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে আল-ফালাহ মিলনায়তনে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর পূর্বে জনগণের দাবি মেনে নেওয়া না হলে উক্ত সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, যমুনার সামনে, অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ঘোষিত কর্মসূচি সর্বতোভাবে সফল করার জন্য দেশবাসী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পরিবহন মালিক এবং ট্রাফিক পুলিশসহ সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে। কর্মসূচি ঘোষণার পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও মিয়া গোলাম পরওয়ার।

১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত আন্দোলনরত ৮ দলের সমাবেশ সার্বিকভাবে সফল করায় এ সময় আন্দোলনরত দলসমূহের পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগরীসহ সর্বস্তরের জনগণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পরিবহন মালিক এবং ট্রাফিক পুলিশসহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয়।

আগের দিন মঙ্গলবার দুপুরে অবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে পল্টনে সমাবেশ করে দলগুলো। সমাবেশে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া ২০২৬ সালে কোনো নির্বাচন হবে না। জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় আন্দোলনরত আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে আল-ফালাহ মিলনায়তনে দুপুর সাড়ে ১২টায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জনগণের দাবি মেনে নেওয়া না হলে ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল নানা কর্মসূচি দিয়ে নির্বাচন পেছাতে চাইছেÑএমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, তারা ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চান। গতকাল সমাবেশে তাদের আমীর বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও নভেম্বরে গণভোট হলে জানুয়ারিতে নির্বাচন করতেও তাদের কোনো আপত্তি নেই।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলাম। যদি সাক্ষাতের পরও আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা তার বাসভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচিতে যাব। তিনি আরও বলেন, তারা চান জাতীয় নির্বাচন নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হোক।