জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের পর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। তার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হবে না। ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে ৩টি বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করতে হবে।
গত সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ বলেন, চলতি বছর ৫ আগস্টের আগে জুলাই সনদ কার্যকর করতে হবে এবং জুলাই সনদের পরে রোডম্যাপের ঘোষণা করতে হবে। তার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হবে না বলে মতামত দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন সংস্কার করা উচিত। নির্বাচন কমিশনকেও পুনর্গঠন করতে হবে।’ এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে জুলাই সনদ তৈরি করা হবে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। পবিত্র ঈদুল আযহার আগে একদিন এবং ঈদের পরে দলগুলোর ধারাবাহিকভাবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা চলবে। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার কমিশনের যেসব মৌলিক প্রস্তাবে এখনো ঐকমত্য হয়নি সেগুলো এ পর্বে বেশি গুরুত্ব পাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, এই সংলাপের মাধ্যমে জুলাই সনদ চূড়ান্ত রূপ পেতে পারে।
উল্লেখ্য, সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা ও চূড়ান্ত করার উদ্দেশ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। সংলাপের প্রথম দফা অনুষ্ঠিত হয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত। সেসময় ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন।
দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপ শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল ৫টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সংলাপ শুরু হয়। এতে ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই সংলাপে অংশ নেন সালাহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দল, নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে জামায়াতের প্রতিনিধি দল, এবি পার্টি, গণঅধিকার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিনিধিরা, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।