বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় নি, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকার কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, দলটিকে আশ্বস্ত করা হয়েছে- সরকার নিরপেক্ষভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই তবে রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য বিবৃতির কারণে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তবে আমার ধারণা যখন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি দেখবো তখন এ সংক্রান্ত সকল সংশয় খুব দ্রুত কেটে যাবে। সরকার সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতেই চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, জনপ্রশাসনের বদলি ও নিয়োগ নিয়ে বিএনপির আপত্তির প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বিষয়টি দেখভাল করবেন। সব দল অভিযোগ করছে প্রশাসনে দলীয় লোক আছে এর মানে এই সরকার নিরপেক্ষ।

১৫ সেনা কর্মকর্তার বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, গুম-খুনের আসামী সেনাকর্মকর্তাদের সাবজেলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ট্রাইব্যুনালে যে বিচার প্রক্রিয়া চলছে এবং তার প্রতি সেনাবাহিনীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আসামীদের কোথায় রাখা হবে সেটি সম্পূর্ণভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভুক্ত বিষয়। তারা যা উপযুক্ত মনে করবে, সেটিই করবে।

নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে কিনা এ ধরনের এক প্রশ্নের উত্তরে আইন উপদেষ্টা বলেন, না না এ ধরনের কোনো কিছু আলোচনা হয়নি, এটা উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনার বিষয়। নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে নাকি এ ধরনের কোনো দাবিও কোনো মহল থেকে উত্থাপিত হয় নি।

অপর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জনপ্রশাসনের দায়িত্বে আছেন। তিনি জনপ্রশাসনের দায়িত্ব আরও ক্লোজলি মনিটর করবেন। বদলি দলীয়ভাবে হয় কিনা এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, না, আমরা মনে করি না দলীয়ভাবে হয়। শোনেন আমাদের বিরুদ্ধে সব দলই অভিযোগ করে যে একদল বলে ওই দলের লোক আছে, আরেক দল বলে ওই দলের লোক আছে, আরেক দল বলে ওই দলের লোক আছে। যেহেতু সব দলই অভিযোগ করে অন্য দলের লোক আছে তার মানে হচ্ছে যে আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছি।

এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে সেনা সদস্যদের যেভাবে আনা হয়েছে, তা অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

উপদেষ্টা বলেন, আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে সেনা সদস্যরা যেভাবে এসেছেন, ওনাদের যেভাবে নিয়ে আসা হয়েছে, সেনা প্রশাসন বা সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, সেনাবাহিনীর প্রধান যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, এটা অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। তারা আইনের শাসনের প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়েছেন, সেটা আমরা খুব পজিটিভলি (ইতিবাচকভাবে) দেখছি।’

তিনি বলেন, সাব-জেলে কেন রাখা হয়েছে, ওনাদের (সেনা সদস্য) কোথায় রাখা হবে- এটা সম্পূর্ণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভুক্ত বিষয়। যেটা যথোপযুক্ত মনে করবেন, ওনারা করবেন। এর জবাব দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই।