দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘নিঃশব্দে সবকিছু গ্রাস করছে জামায়াত’ শিরোনামে ৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যেসব মনগড়া, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বিবৃতি দিয়েছেন।
গতকাল সোমবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘নিঃশব্দে সবকিছু গ্রাস করছে জামায়াত’ শিরোনামে ৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যেসব মনগড়া, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে, আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ও বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর এবং হলুদ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত। এতে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে জনমনে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, যা ন্যূনতম নৈতিকতা ও সাংবাদিকতার মানদন্ডের পরিপন্থী। তিনি আরও বলেন, দেশবাসী জানেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি সুসংগঠিত, আদর্শবাদী ও শৃঙ্খলাপূর্ণ ইসলামী রাজনৈতিক দল। সদ্যসমাপ্ত ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশ তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। লাখো মানুষের উপস্থিতিতেও যে শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে, তা গোটা জাতির কাছে প্রশংসিত হয়েছে। জামায়াতের নীতি-আদর্শ, শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা যে কোনো বিবেকবান মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য বলেই প্রমাণিত হয়েছে। বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে জামায়াতের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও সততার প্রশংসা করে মন্তব্য করেছেন ‘তাদের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, সততার সুনাম সব দলের জন্য অনুকরণীয়’। এই মন্তব্যকে ঘিরে ইনকিলাব যে হিংসাত্মক ও অসত্য প্রচারণা চালিয়েছে, তা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। কোনো গঠনমূলক মন্তব্যকে ‘বিতর্কের ঝড়’ বলে উপস্থাপন করার মাধ্যমে সংবাদপত্রটি তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ‘নেটিজেনদের কেউ কেউ জামায়াতের সততা ও শৃঙ্খলাকে প্রাণঘাতী ক্যান্সারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।’ এমন মন্তব্য কেবল অসুস্থ মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। সততা, শৃঙ্খলা, নিয়মতান্ত্রিকতা ও ন্যায়নিষ্ঠতা এগুলো কোনো সমাজে ক্যান্সার ছড়ায় না; বরং এগুলোই একটি সুশাসিত ও সুস্থ সমাজ গঠনের মূল ভিত্তি। দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা কর্তৃক এ ধরনের বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনের একাংশে জামায়াতের ৪৭ ও ৭১ সালের ভূমিকাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জামায়াত কোনো স্বৈরাচারকে টিকিয়ে রাখেনি, বরং কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে স্বৈরাচার পতনের পথ সুগম করেছে। পক্ষান্তরে ইনকিলাব পত্রিকা সেই স্বৈরশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে, যা ইতিহাস ভুলে যায়নি।
তিনি বলেন, আমি দৈনিক ইনকিলাবের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক ও কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই, তারা যেন নিজেদের অতীত আয়নায় দেখে সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারিত্ব বজায় রাখেন এবং জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানো থেকে বিরত থাকেন। একইসঙ্গে আমি আশা করি, ইনকিলাব কর্তৃপক্ষ এই প্রতিবাদটি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করার সুযোগ করে দেবেন।