জাতীয় নাগরিক পার্টির (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি-এনসিপি) সঙ্গে দ্বিতীয়বার আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। পাঁচ সংস্কার কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবনা ও সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করা হবে এ বৈঠকে।

আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে পূর্ব নির্ধারিত এ বৈঠক বসে। শুরুতেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের কাছে সংস্কার প্রস্তাবনা হস্তান্তর করেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কমিশন সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

অন্যদিকে, এনসিপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার ও জাবেদ রাসিন।

বৈঠকের আখতার হোসেন বলেন, গত ৫০ বছরে রাষ্ট্র কাঠামোতে যে স্বৈরাচারী পদাঙ্ক থেকে গেছে তার কারণে জনগণ নানা সময় নিপীড়িত ও নির্যাতিত হয়েছে। সেই স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী কাঠামো থেকে বাংলাদেশের সংবিধান ও রাষ্ট্রকাঠামোকে উত্তরণ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই এ বৈঠক হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মানুষের শাহাদাত বরণ কর যেন সার্থক হয়। এ দেশে যেন কখনোই আগের ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে উঠতে না পারে। ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা ও বিকেন্দ্রীকরণই মৌলিক সংস্কারের মূল ভিত্তি। এগুলো অর্জন করতে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে স্বৈরাচার মুক্ত করা, সাংবিধানিক পদগুলোতে দলীয়করণ পরিহার এবং বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করতে হবে।

এনসিপির সদস্য সচিব জানান, যে বিষয়গুলোতে সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করি সেগুলোর ওপর আমরা একটি রূপরেখা পেশ করেছি।

সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, আমরা বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি লাভ করেছি। যে সকল বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে আশা করি সেগুলোরও অগ্রগতি হবে বৈঠকে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ মে এর মধ্যে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করার চেষ্টা করছে কমিশন। এরপর দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা যায়, প্রথম বৈঠকের অসমাপ্ত আলোচনার পাশাপাশি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এবং দুদক সংস্কার কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবানা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হবার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল প্রথমবারের মত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসে এনসিপি। সেদিন সংবিধান, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন সংস্কার বিষয়ে কমিশনের দেওয়া সুপারিশমালা নিয়ে আলোচনা হয়।