বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, জনগণের কাছে ইসলামের আদর্শিক সৌন্দর্য পৌঁছিয়ে দেয়ার মাধ্যমে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের প্রতিহত করতে হবে। সন্ত্রাস-চাঁদাবাজদের গডফাদার কারা, জনগণ তাদেরকে চেনে ফেলছে। আগামী নির্বাচনে জনগণই তাদেরকে ভোটের মাধ্যমে বয়কট করবে। ইতোমধ্যে ডাকসু, জাকসু, চাকসু ও রাকসু শিক্ষার্থীরা তাদেরকে বয়কট করেছে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) বাদ মাগরিব চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীহাটি ইউনিয়নে নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, জনগণ সুযোগ দিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শহর ও গ্রামের মধ্য পার্থক্য থাকবে না। শহর ও গ্রাম সমানভাবে উন্নয়নের সুফল পাবে। রাষ্ট্রীয় সেবা জনগণের দৌড়গৌড়ে পোঁছিয়ে দেওয়া হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের মুক্তির জন্য যা যা করার তার সবটুকুই তিনি করবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহরে-নগরে কে কোথায় চাঁদাবাজি করে, বোমাবাজি করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ সবই জানে। নয়লাভাঙ্গা ইউনিয়নে কোন নেতা চাঁদাবাজি আর বোমাবাজির নেতৃত্ব দেয় সেটাও জনগণ জানে। চাঁদাবাজি-বোমাবাজি করে জনগণের ভোট পাওয়া যাবে না বরং আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে।

নতুন বাংলাদেশ গড়তে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, বোমাবাজ, লুটপাটকারী, দখলদ্বারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তিনি স্থানীয়দের আহ্বান জানিয়ে বলেন, জামায়াতে ইসলামী সুখি-সমৃদ্ধ একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে চায়, জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ ও ন্যায় বিচারের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চায়। মানবিক বাংলাদেশ গড়তে তিনি সারাদেশবাসীর মতোই চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের জনগণকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শুধু জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করায় বিগত ১৭ বছরের একরাতও নিজ ঘরে ঘুমাতে পারিনি! শুধু আমি নয়, জামায়াতে ইসলামীর লাখ-লাখ নেতাকর্মী বাড়ি ছাড়া, ঘর ছাড়া হতে হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ ১১জন নেতাকে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে বিচারিক হত্যা করা হয়েছে। তাদেরকে হত্যার আগে আধিপত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদের কাছে মাথানত করতে, আপোষ করতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব মানলে স্বসম্মানে নিজ পরিবারের কাছে দিয়ে আসা হবে। এরপরও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ আধিপত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদের কাছে মাথানত করেনি, আপোষ করেনি। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়েছে, ফাঁসি বরণ করে নিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় অফিস থেকে ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের অফিস গুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের পাশাপাশি সাধারণ মুসল্লিদেরও দাঁড়ি-টুপি দেখলেই জামায়াত-শিবির উপাধি দিয়ে আটক করে জুলুম -নির্যাতন চালিয়েছে। খুন-গুম, কারা নির্যাতন এতো-এতো জুলুমের পরও জনগণ থেকে জামায়াতে ইসলামীকে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি, যাবে না। জামায়াত ফ্যাসিস্ট অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বুলেটের সামনে বুক পেতে দিতে দ্বিধাবোধ করেনি, এখনকার চুনোপুঁটিকেও জামায়াত ভয় করে না, পরোয়ার করে না। জামায়াত এক আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করে না, করবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির সকল অপশক্তি রুখে দিবে। নতুন বাংলাদেশ গড়বেই, গড়বে ইনশাআল্লাহ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রানীহাটি ইউনিয়ন আমীর মাওলানা আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা নায়েবে আমীর ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মোখলেশুর রহমান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. আবু বকর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা আমীর হাফেজ আব্দুল আলীম। এছাড়াও সমাবেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা, সদর উপজেলা ও রানীহাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শুরুর আগে বিকেলে থেকেই স্থানীয়দের ঢল নামে সভাস্থলে।