বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে পতিত, পরাজিত, পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসনের পথ সহজ হয়ে উঠবে। এজন্য তিনি গণতন্ত্রকামী জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় সভায় ভার্চুয়ালি যোগ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের রাজপথের সহযোদ্ধা কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের বা তাদের সদস্যদের বক্তব্যে গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে নানা জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে বিভেদ ঘোচানোর বার্তা দিয়ে তারেক রহমান বলেছেন, একাত্তর ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, চব্বিশ স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ইতিহাসের নৃশংসতম এক ফ্যাসিস্টের পদত্যাগ এবং পলায়নের পর এখন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তি নিজেদের মধ্যে নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিতর্কে লিপ্ত হওয়া শহীদদের আত্মত্যাগের অবমাননার শামিল। গণতান্ত্রিক ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়ার মাধ্যমেই শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা এখন সময়ের দাবি।
কথার রাজনীতি বাদ দিয়ে কাজের রাজনীতিতে মনযোগী হওয়ার প্রতি জোর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইলে অবশ্যই আমাদেরকে প্রচলিত ধারার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা কিংবা কথা বলার রাজনীতির পরিবর্তে বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রচলিত রাজনীতির ধারার গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি কেমন হবে-সে বিষয়ে আলোকপাত করে তারেক রহমান যোগ করেন, বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি। সেটি দেশের ভেতরে হোক, বিদেশে হোক। যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। আমাদের আরেকটি লক্ষ্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অদ্ভুত এক ঘটনা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঘটতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। কিন্তু বাংলাদেশে তা করছে একদল অনির্বাচিত লোক। যারা কেউ আমেরিকা থেকে, কেউ লন্ডন থেকে কিংবা বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে। যাদের গত ১৭ বছরের সংগ্রামে কোনো অংশগ্রহণ নেই, জুলাই অভ্যুত্থানে কোনো অংশগ্রহণ নেই, তারা বাংলাদেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দিতে চায়।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের সঞ্চালনায় এতে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।