বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, আগামীতে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সবার ঊর্ধ্বে দেশ গঠনে কাজ করবে জামায়াতে ইসলামী। তিনি বলেন, সবার ঊর্ধ্বে দেশ কোন নেতা দুর্নীতি করতে পারে না। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে না। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, লুটপাট না করলে পালাতে হয় কেন প্রশ্ন রেখে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী আজ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর কোন নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। কারণ জামায়াতে ইসলামীতে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ নেই। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ ৩টি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ তাদের বিরুদ্ধে ২টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আনতে পারেনি। আগামীতে জনগণ জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে, দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ মুক্ত, বৈষম্যহীন, ন্যায় বিচারের ইনসাফ ও মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র জাতিকে উপহার দেওয়া হবে। এমন একটি রাষ্ট্র আমরা গঠন করবো, যেই রাষ্ট্রকে বিশ্ব অনুসরণ করবে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকা-৭ নির্বাচনী এলাকার চকবাজারে ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নের জন্য গণমিছিল পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, চকবাজার-বংশাল জোন পরিচালক দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক, ঢাকা-৭ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাজী এনায়েত উল্লাহ। বংশাল-চকবাজার জোনের সহকারী পরিচালক এস.এম আহসান উল্লাহ’র পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চকবাজার বংশাল জোনের টিম সদস্য বংশাল দক্ষিন থানা আমীর মাহবুবুল আলম ভূইয়া, চকবাজার থানা আমীর আনিসুর রহমান, কোতোয়ালি আমীর মতিউর রহমান, চকবাজার উত্তর থানা আমীর মাওলানা মাহফুজুর রহমান, বংশাল পূর্ব থানা আমীর মাওলানা তাজুল ইসলাম, বংশাল উত্তর থানা আমীর মাওলানা বেলাল হোসেন, চকবাজার পশ্চিম থানা আমীল আবুল হোসেন রাজন, চকবাজার পূর্ব থানা আমীর মো. রফিকুল ইসলাম সহ থানা সেক্রেটারি ও কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা প্রতিবেশী কোন রাষ্ট্রের করদ রাজ্য হিসেবে থাকতে চাই না। স্বাধীনতার পরবর্তী প্রতিটি সরকার জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করে ক্ষমতা ধরে রাখতে আধিপাত্যদের তাবেদারি করেছ। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা আধিপাত্যবাদ, ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করেছে। এদেশে আর আধিপাত্যবাদ, ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটতে দিবে না। নতুন বাংলাদেশে যারা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেছে তাদের সেই স্বপ্ন ছাত্র-জনতা গুড়িয়ে দিবে। তিনি বলেন, জুলাইয়ের চেতানা বাস্তবায়নে জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জামায়াতে ইসলামী বৈষম্যহীন একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে আসছে। তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী জামায়াতে ইসলামী বারবার দাবি জানিয়ে আসছে রাষ্ট্র সংষ্কার, গণহত্যার বিচার করে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ৭ দফা জামায়াতে ইসলামীর দলীয় দাবি নয়, গণমানুষের দাবি। ‘বিগত ১৭ বছরের প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিরকরণের’ এই ৭ দফা আদায় হলেই মানুষের অধিকার আদায় হবে, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মিত হবে। ১ কোটি ১০ লাখ প্রবাসীর ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি আদায়ে কোন আপোষ নয়। তাই তিনি ৭ দফা দাবি আদায়ে দেশবাসীকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

পরে মহানগরীর আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে, ঢাকা-৬ নির্বাচনে এলাকার সদরঘাটে ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশের পক্ষে গণসংযোগ অভিযান পরিচালিত হয়। মিছিল পূর্বক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নূরুল ইসলাম বুলবুল। ঢাকা-৬ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক ও মহানগরীর অফিস সেক্রেটারি কামরুল আহসান হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ঢাকা-৭ নির্বাচনী এলাকার জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।