গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত নিয়মিত যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী যদি অভিযান পরিচালনা করে আমার ধারণা এ পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। দেশের শিল্প এলাকাগুলোতে একদল দুর্বৃত্ত আধিপত্য, চাঁদাবাজি, মাস্তানি ও টেন্ডারবাজি করছে। এগুলো নিরসনের জন্য নিয়মিত যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করলে দেশ অনেকটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাবে। আর যৌথ বাহিনী সাধারণ মানুষ আর ছাত্রদের ধরবে না। যদি অভিযান পরিচালনা করে তারা দুষ্কৃতকারীদেরই ধরবে। কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের পেছনে আসলে দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্র রয়েছে। দিন দিন হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা বেড়েছে। পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করছে। দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে যৌথ বাহিনীর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে। অভিযান চিহ্নিত অপরাধীদেরও আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে পরিচালিত করতে হবে। হাজারো শহীদদের রক্তের বিনিময়ে দেশ একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। অথচ কিছু রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে একদল দুর্বৃত্ত সারা দেশে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশকে আবারও গণঅভ্যুত্থান পূর্ববর্তী পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।

গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১১ টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব-এর ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কে এমপি হবে সেটা আগে জানার সুযোগ নেই। যার ফলে বাংলাদেশের পেশিশক্তি, কালো টাকার প্রভাব রাজনীতিতে আর থাকবে না। কেন্দ্র দখল করতে যে ভায়োলেন্স হয় সেটাও থাকবে না। গণঅধিকার পরিষদ একটি অর্গানিক দল। গণআন্দোলনের মধ্যে এ দলটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় পর্যায়ের সবগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আগে হওয়া উচিত। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচন। এতে করে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর চরিত্র দেখতে পেতাম। তারা কী আগের মতো মারামারি, কেন্দ্র দখল করছে কি না সে বিষয়ে দেখার সুযোগ আছে। এছাড়া প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে কিনা সেটাও দেখা যাবে।

তিনি বলেন, দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় প্রশাসন কোথাও অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না। রাজধানীসহ দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কারা অপরাধ করছে, রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে সরকারকে আবারও নতুন করে জনরোষের মুখোমুখি হতে হবে।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব মো জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও বৈশাখী টিভির ব্যুরোচীফ গোলামা মওলা মুরাদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সিএমইউজের সাবেক সভাপতি সামশুল হক হায়দারী, দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি মুস্তফা নঈম, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, গণঅধিকার নেত্রী নাসরীন। উপস্থিত ছিলেন নিউজগার্ডেন সম্পাদক কামরুল হুদা, একুশে টিভির ব্যুরোচীফ হাসান ফেরদৌস, দিদারুল হক, মোহম্মদ হোসেন, এ কে আজাদ, তানভীর সহ সাংবাদিক ও গণঅধিকার নৃতৃবৃন্দ।

খুলনায় যুবদল নেতা মাহাবুব

হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রতিবেশী

যুবক সজল গ্রেফতার

খুলনা ব্যুরো : খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানা যুবদলের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সজল (২৭) নামের এক প্রতিবেশী যুবককে গ্রেফতার করেছে। শনিবার রাত সোয়া ২ টার দিকে দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সজল ওই এলাকার বাসিন্দা সাহেব আলীর ছেলে। তিনি ওই সড়কে মুদি দোকানের ব্যবসা ছিল।

সজলের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী বলেন, কিলিং মিশনে তার অংশগ্রহণ ছিল না। কিন্তু মাহাবুবের অবস্থান সম্পর্কে খুনীদের যাবতীয় তথ্য দিয়েছে সজল। তার তথ্যের ওপর নির্ভর করে দুর্বৃত্তরা মাহবুবকে নির্মমভাবে গুলী এবং পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সজল অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) তাজুল ইসলাম বলেন, এ হত্যাকান্ডে সজল সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। আমরা এ তথ্য নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেফতার করেছি। শুধু এ হত্যাকান্ড নয় সে গোপন সংগঠনের তথ্য সরবরাহ করে থাকে। হত্যাকান্ডের সময়ে সজল খুব কাছাকাছি থেকে দুবৃত্তদের খবর আদান প্রদান করেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেওয়া হবে। তার কাছ থেকে আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব এবং মূল খুনীদের দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকার বাসিন্দা এবং যুবদলের দৌলতপুর থানার সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুব নিজের বাড়ির সামনে প্রাইভেটকার পরিস্কার করছিলেন। এ সময়ে একটি মোটরসাইকেলযোগে আসা তিনজন দুর্বৃত্ত মাহবুবকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করি। ৯টি গুলি মাহাবুবের শরীরে বিদ্ধ হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার দু’পায়ের রগ কেটে দেয় ওই দুর্বৃত্তরা। ঘটনার একদিন পর নিহতের পিতা বাদি হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন, যার নং-১২।