# আমরা নির্বাচন চাই একই সাথে সংস্কারও জরুরি ---জোবায়ের
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হলো পেশাদার সাংবাদিকদের বৃহৎ সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। গতকাল সোমবার সকালে ডিআরইউ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণ্যাঢ্য আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়। ১৯৯৫ সালের ২৬ মে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু হয়েছিলো। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শ্লোগান : ঐক্য-সমৃদ্ধি।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত মহানগর উত্তরের প্রচার সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
অনুষ্ঠানে আমীর খসরু বলেন, আমাদের ঐক্য হবে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। যার মধ্যে মিডিয়ার স্বাধীনতা অন্তর্নিহিত আছে। গণতান্ত্রিক সরকার যে রিফর্ম করতে পারবে তা এই সরকার পারবে না। আগামী দিনে ঐক্য থাকবো গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে চাই। এটা যত বিঘিœত হবে তত বেশি সংকট বাড়বে।
আমীর খসরু বলেন, আগামী দিনে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের জন্য। আমরা একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে চাই। এটা যত বিলম্বিত হবে, যত দেরি হবে তত বেশি আমাদের দেশে সংকট বাড়তে থাকবে। তিনি বলেন, মিডিয়ার কাজ হচ্ছে জবাবদিহিতার আওতায় আনা। যেভাবে নির্বাচিত সংসদে জবাবদিহিতা হয়, মিডিয়াও কিন্তু আরেকটা অংশ।তারাও কিন্তু জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে মানুষের কাছে। সুতরাং আগামী দিনে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের জন্য। আমরা একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে চাই।
আমীর খসরু বলেন, মিডিয়া এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে রাজনীতিবিদকেও সহনশীল হতে হবে। মিডিয়ার প্রতি যদি অগ্রিগেশন দেখাই, মিডিয়ার প্রতি যদি আমরা রাগান্বিত হই... এটা ভালো কিছু নয়।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে রিপোর্টারদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ওই সময়ে যখন অনেকে আমাদের অবস্থাটা, আমাদের বক্তব্যটা দেওয়ার সুযোগ দিতো না তখন আমরা ঘুরে-ফিরে এই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আসতাম। এমনকি এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তারা সাহস করে ওই সময় প্রধান অতিথি করেছিলো। ডিআরইউ‘র নিরপেক্ষ ভূমিকা ভিন্ন ভূমিকা সেটা আমরা স্বীকার করি, এটাই সাংবাদিকদের অবস্থান হওয়া উচিত। আমি তাদের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অভিনন্দন জানাচ্ছি। ডিআরইউ‘র এবারের শ্লোগান ঐক্য-সমৃদ্ধি বিশেষ করে বাংলাদেশের আজকের প্রেক্ষাপটে এই শ্লোগানের গুরুত্ব অনেক বেশি।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, আমরা নির্বাচন চাই একই সাথে সংস্কার ও জরুরি। রাষ্ট্রীয় সরকারের সংস্কার সঠিকভাবে না হওয়ার কারণে ফ্যাসিবাদের জন্ম নিয়েছে। সুতরাং ফ্যাসিবাদ যাতে করে আর কখনো ফিরে না আসতে পারে সেজন্য সংস্কার সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এতে মিডিয়াসহ সকল সেক্টরে স্বাধীনতা বজায় থাকবে।
ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ত্রিশ বছরের পথচলায় ডিআরইউ শুধু একটি সংগঠন নয়, এটি এখন দেশের সাংবাদিক সমাজের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর। তিনি বলেন, ডিআরইউ সব সময়ই সাংবাদিকদের অধিকার, নিরাপত্তা এবং পেশাগত উৎকর্ষতা অর্জনে কাজ করে এসেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই সাংবাদিকরা নির্ভয়ে এবং দায়িত্বশীলভাবে তাদের পেশাগত কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, সে জন্য ডিআরইউ সবসময় পাশে থাকবে।
সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল তার বক্তব্যে বলেন, ডিআরইউ শুধু সংবাদকর্মীদের সংগঠন নয়, এটি একটি আন্দোলনের নাম, একটি চেতনার নাম। তিনি ডিআরইউ-র অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও কল্যাণমূলক কর্মকা-ের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়ন ও সুরক্ষায় কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
অনুষ্ঠানে ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলামসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে কেক কাটা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাল্টিমোড গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল মিন্টু। এসময় তিনি বলেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন। প্রতিষ্ঠাবার্ষীকিতে এই সংগঠনে সাফল্য কামনা করি। দেশের গণতন্ত্রের উত্তরনে সাংবাদিকদের ভুমিকা অপরিসীম। আশা করি সাংবাদিকরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ডিআরইউ চত্বর বেলুন দিয়ে সাজানো এবং আলোকসজ্জা করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইনসাফ বারাকাহ কিডনী এন্ড জেনারেল হাসপাতালের সৌজন্যে দিনব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, দক্ষিণের সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, জামায়াত মহানগর দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন, সহকারি প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন, পল্টন থানা জামায়াত ইসলামীর আমীর শাহিন আহমেদ খান, সোনালী ব্যাংক পিএলসি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, ইনসাফ বারাকাহ কিডনী এন্ড জেনারেল হাসপাতাল।