বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঘোষিত ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান–২০২৪’ শীর্ষক স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে “জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ” প্রতিপাদ্যে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন জুলাই শহীদ আব্দুল্লাহ আল তাহিরের সম্মানিতা মা।

কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এম পি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. তাহের বলেন, “ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দেয়। পুরো জাতি কিভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হয়, সেটি শেখায়। জুলাই হচ্ছে সাহসের নাম, অনুপ্রেরণার নাম। এ আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করলেও কিছু শ্রেণির মানুষের অবদানই শুধু তুলে ধরা হয়—অন্যদের অবদান অবহেলিত থাকে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের অবদান কোথাও তুলে ধরা হচ্ছে না। অথচ রাষ্ট্রের উচিত ছিল সবার অবদানকে বৈষম্যহীনভাবে মূল্যায়ন করা। ইতিহাস একসময় সত্যকে উদঘাটন করেই। তাই প্রকৃত ইতিহাস চর্চা সবার জন্য জরুরি।”

Untitled.jpeg২

তিনি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে আইনি ভিত্তিসহ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করতে হবে। কোনো দলের প্রভাব বা বাধা নয়, বরং সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সংস্কার ও গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হবে। আমরা যেনতেন কোনো নির্বাচন চাই না। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন এবং আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা অবিলম্বে করতে হবে।”

Untitled.jpeg৪

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ইতিহাসকে আমরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে চাই। স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতা, কালচারাল ফেস্ট এবং আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা জুলাই চেতনাকে ধারণ করেছি।”

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অবিলম্বে গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হবে। জুলাই চেতনাকে ধারণ করে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। অদূরদর্শিতা ও অলসতা পরিহার করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “অতীতে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। এখন যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানাই।”

Untitled.jpeg1

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, বুয়েটের শিক্ষক প্রফেসর ড. ফখরুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ, ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, জুলাই শহীদ নাহিদ হাসান রিয়ানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক, আহত তাহমিদ হুজায়ফা ও আহমেদ জুবায়ের এবং কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যবৃন্দ।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে জমা পড়া ৩ হাজারের অধিক স্মৃতিলেখন থেকে বাছাইকৃত ৫০টি লেখাকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হয় নগদ শিক্ষাবৃত্তি, সনদপত্র, বই এবং ক্রেস্ট।