দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ রক্ষা করা সবার পবিত্র কর্তব্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।
বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ ২০২৫ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে বিভিন্ন তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে পালন করছে। এমন এক সময়ে যখন অপরিণামদর্শী শিল্পায়ণের পাশাপাশি অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকা- বিশ্বজুড়ে পরিবেশ ও বাস্তসংস্থান হুমকির মুখে ফেলছে, তখন এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই জীবনের প্রয়োজনীয়তা কতটা জরুরি। তিনি আরও বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশগত বৈচিত্র্যে অনন্য। অতএব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই সমৃদ্ধ অনন্য পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপি পরিবেশ সচেতন একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, খাল খনন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প এবং ক্ষতিকর পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নানা উদ্যোগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছি।
তারেক রহমান বলেন, ১৯৭৭ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প চালু করেন, যা পরবর্তীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট) হিসেবে রুপ নেয়। তার এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে বিএনপি বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৫ সালে “বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন” প্রণয়ন করেন এবং দেশের প্রথম পরিবেশ আদালত প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরিবেশ সুরক্ষায় আইনি কাঠামোর পথপ্রদর্শক। আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই একটি সবুজ ও পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
তারেক রহমান বলেন, ক্রমবর্ধমান চরম অবনতিশীল জলবায়ু সংকট ও শিল্প দূষণের প্রেক্ষাপটে এখন একটি বাস্তবমুখী ও দুরদর্শী জাতীয় কৌশল আগের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশী প্রয়োজন। বিএনপি যদি নির্বাচিত হয়ে দেশ শাসনের সুযোগ পায় তাহলে, পুনর্বনায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং টেকসই কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি জাতীয় গ্রিন রিকভারি প্ল্যান প্রণয়ন করবে। ক্ষতিকর প্লাস্টিক ও বিষাক্ত রাসায়নিক নিষিদ্ধ করে শিল্প ও গৃহস্থালির জন্য পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার উৎসাহিত করবে। পানিবদ্ধতা মোকাবেলায় ও জলজ প্রতিবেশ রক্ষায় নদী-খালের পূর্ণাঙ্গ খনন ও পুনরুদ্ধার কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলিতে জলবায়ু সহনশীল কৃষি ও অবকাঠামো গড়ে তুলতে সহায়তা প্রদান ও পরিবেশ সচেতন নাগরিকদের একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে স্কুল পাঠ্যক্রমে পরিবেশ সম্পর্কিত শিক্ষাকে একীভূত করা হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ কোনো বিলাসিতা নয় মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, এটা একটা অতীব জরুরী কাজ। আসুন, আমরা সামগ্রিক রাজনৈতিক ও সামাজিক সীমানায় একটি টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে একত্রিত হই, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি সবুজ, বাসযোগ্য এবং টেকসই বাংলাদেশের উত্তরাধিকারী হয়। এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে, আসুন আমরা আশার বীজ বুনি, আমাদের বায়ু, পানি ও মাটি রক্ষা করি এবং সকলের জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি।