ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইল কর্তৃক বোমা হামলা চালিয়ে নারী শিশুসহ অসংখ্য নিরপরাধ মুসলমানদের গণহত্যা এবং তাদেরকে দেশান্তরিত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী।
আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) বাদ যোহর কামরাঙ্গীরচর নুরিয়া মাদ্রাসা থেকে ইসরাইলী গণহত্যার প্রতিবাদে গাযাবাসীর আহবানে "গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাযা" বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে ফিলিস্তিনি পতাকাসহ বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কামরাঙ্গীরচরের প্রধান প্রধন সড়ক প্রশিক্ষণ করে বিড়িবাধে গিয়ে এক বিশাল সমাবেশে মিলিত হয়।
তিনি বলেন, বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইতিহাসের বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে। গণহত্যা চালিয়ে পৃথিবী থেকে মুসলমানদেরকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। অবৈধ দখলদার ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, কবরস্থান, মসজিদসহ পুরো এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। পুরো ফিলিস্তিনকে দখল করে ইহুদি রাষ্ট্র গঠন করাই ইসরাইলের মূল টার্গেট। গত ঈদুল ফিতরের দিনেও নির্মমভাবে হামলা চালিয়ে শতশত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। ঐক্যবদ্ধ জিহাদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে রক্ষা করতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে ফিলিস্তিনি মজলুম মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব। লোহার ব্রিজ বাঁধে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, জামিয়া নুরিয়ার প্রধান মুফতি মাওলানা মুজিবুর রহমান, মুফতি ইলিয়াস মাদারীপুরী, মুফতি আ ফ ম আকরাম হোসাইন, মুফতি আবুল হাসান কাসেমী ও মুফতী আবদুস সালাম প্রমুখ।
মওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী আরো বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন প্রায় একশত ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করছে তারা। গতকাল ৬ এপ্রিল ২০২৫ ইং পর্যন্ত অর্ধ কোটির বেশি ফিলিস্তিনি মুসলমানকে হত্যা করেছে ইজরাইল। এ পর্যন্ত ধ্বংস স্তূপের নীচে চাপা পড়ে যারা নিখোঁজ রয়েছে এতে ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে বিশেষজ্ঞগণ। ইসরাইলিবাহিনীর নিষেধাজ্ঞার ফলে এক মিলিয়নেরও বেশি শিশু মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত। ইসরাইলি কারাগারে অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে অনেক ফিলিস্তিনি শিশু। মুসলিম নারীদেরকে যৌন হয়রানি করছে এবং যুবকদেরকে ধরে ধরে গুলি করে হত্যা করে মাটি চাপা দিচ্ছে নিষ্ঠুর ইসরাইলী সৈন্যরা। এই মুহূর্তে মুসলমানদের ঘরে বসে থাকার সময় নেই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় দুশমনদের মোকাবেলায় যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, ইসরাইল বিশ্বের মাঝে একটি বিষফোঁড়া। ইসরাইল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। ইসরাইল চলে আমেরিকার অর্থে, আমেরিকার অস্ত্রে। মার্কিনীদের মদদে ইসরাইল যে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস করছে, গণহত্যা করছে, বিভিন্ন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লংঘন বা নস্যাৎ করছে, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের কোনো বিকার নেই, উদ্বেগ নেই। পূর্বেও নানা অজুহাত ও কুযুক্তিতে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা হামলা চালিয়েছে, দখল করেছে, ধ্বংস করেছে এবং অবাধ গণহত্যা চালিয়েছে। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলকে প্রতিহত করতে ব্যর্থ হলে বিশ্ববাসীকে চরম মাসুল দিতে হবে