জুলাই সনদ সম্পন্ন করে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য জননেতা ডক্টর, এ,এইচ,এম,হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন একমাত্র ইসলামই সকল ধর্মের মানুষের অধিকার ও সম্মান সংরক্ষণ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো বলেন এতোদিন জামায়াত ইসলাম সম্পর্কে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝে অপপ্রচার চালিয়েছিল একটি স্বার্থান্বেষী মহল। সময়ের বিবর্তনে জামায়াত ইসলামি এখন সকল অপবাদ ও অপপ্রচারের উর্ধ্বে উঠে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। এরপরও ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার থেমে নেই। তাই সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ডক্টর হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জুলাই বিপ্লবে হাজারো ছাত্রজনতার রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে অর্জিত সফলতা কখনো বৃথা যেতে পারেনা। জুলাই বিপ্লব কোন দলের একক অর্জন নয়। আল্লাহর সাহায্য সকলের সম্মিলিত সহযোগিতার প্রচেষ্টায় ফ্যাসিস্টের শোচনীয় বিদায় হয়েছে। এখন যারা জুলাই বিপ্লবের সফলতা কে একক অর্জন দাবি করে তারা তখন দেশে ছিল কিনা প্রশ্ন করেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার মহেশখালী উপজেলা পরিষদের হল রুমে মহেশখালী হিন্দু-বৌদ্ধ সম্প্রীতি পরিষদ কতৃক আয়োজিত হিন্দু ও বৌদ্ধদের সাথে মতবিনিময় সভায় ডক্টর হামিদুর রহমান আযাদ এসব কথা বলেন। হামিদুর রহমান আযাদ আরো বলেন, আমরা মানুষ, সৃষ্টির সেরা জীব। আমাদের আচার ব্যবহার, কাজকর্মেও সেরা হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। ইসলাম ধর্মই সকল নাগরিকদের সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করেছে। তাই সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চাঁদাবাজ, দখল বাজ ও শোষণ মুক্ত এবং বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ডক্টর হামিদুর রহমান আযাদ আরো বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র লিখিত সংবিধান মদিনা সনদ। রাসুল (সা.) মদিনা সনদের মাধ্যমে সকল ধর্ম ও গোত্রের মানুষদের নিয়ে একটি সুখী, সমৃদ্ধির সুন্দর ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যেখানে সকল ধর্ম ও গোত্রের মানুষ গুলো তাদের নিজ নিজ অধিকার ভোগ করেছিলেন ঠিক বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী সেই মদিনা সনদের আলোকে বাংলাদেশকে একটি কল্যান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ডক্টর আযাদ বলেন, মহেশখালীর ভুমি সংরক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলে মহেশখালীর উন্নয়ন দৃশ্যমান করতে মহেশখালী-কক্সবাজার সেতু নির্মাণ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
হিন্দু ধর্মীয় ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য বাবু পরিমল শীলের সভাপতিত্বে বাবু রাজিব কান্তি দে’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মোঃ জাকের হোছাইন, মহেশখালী উপজেলা দক্ষিণের আমির মাষ্টার শামিম ইকবাল, ব্যাংক কর্মকর্তা শহিদুল ইমরান, মহেশখালী উপজেলা দক্ষিণের সেক্রেটারি মৌলানা আব্দুর রহিম, ওলামা বিভাগের সভাপতি কুতুব উদ্দিন, শ্রমিক কল্যানের উপজেলা দক্ষিণের সভাপতি ডাঃ ওসমান সরওয়ার, মহেশখালী পৌরসভার সভাপতি কাউন্সিলর মোতাহের হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন ব্যবসায়ি আলমগীর, শ্রমিক নেতা আব্দুল খালেক, প্রদিপ দে শ্রীধাম, ছাত্র নেতা নারায়ণ দে, সুকুমার দে, লক্ষি চরন দে, ওতালা মং সহ হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন পেশার মানুষ।
এর আগে সোমবার ইসলামী ছাত্র শিবির মহেশখালী উপজেলা উত্তর ও দক্ষিণের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীল ও কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ডক্টর হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন দেশে সু নাগরিক ও সৎ নেতৃত্ব তৈরির কারখানা হচ্ছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবির। ছাত্র শিবিরের কর্মীরাই আগামী দিনে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। কারণ ইসলামি ছাত্র শিবির সন্ত্রাস ও চাজাবাজীর পরিবর্তে তরুণ ছাত্রদের মাঝে জ্ঞান চর্চা, মেধা বিকাশ, দক্ষতা ও নৈতিক চরিত্র গঠনের মাধ্যমে আদর্শ নাগরিক তৈরির কাজ করে। তাই দেশে সুনাগরিক তৈরি করে বাংলাদেশ কে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ইসলামি ছাত্র শিবিরের কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেইমানি করে এ দেশে কারো রাজনীতি করার সুযোগ নেই। জুলাই বিপ্লব কখনো বৃথা যেতে পারেনা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জুলাই সনদ সম্পন্ন করে ঘোষিত রোড ম্যাপ অনুসারে আবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করার আহ্বান জানান।
ইসলামি ছাত্র শিবির মহেশখালী উপজেলা দক্ষিণের সভাপতি মোঃ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে উত্তরের সভাপতি আবু রাইহানের সঞ্চালনায় হোয়ানক রশিদিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত ইসলামি আন্দোলনের প্রাক্তন ও বর্তমান ভাইদের নিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভার অয়োজন করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।