বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজকে নেতৃত্ব দিতে হবে। যুগে যুগে যুবকরাই ইতিহাসের বাঁক পাল্টাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার তরতাজা উদাহরণ জুলাই অভ্যুত্থান। তিনি বলেন, দুটো সমাজ ইসলামকে দারুণভাবে ধারণ করছে-একটি আমাদের যুবসমাজ, আরেকটা আমাদের মায়েদের সমাজ। আজ পর্যন্ত চারটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন হয়ে গেল। সব জায়গায় একই চিত্র-মেয়েদের আস্থা ছাত্রশিবিরের ওপর; তরুণদের আস্থা ছাত্রশিবিরের ওপর। এরই প্রতিচ্ছবি আগামীতে বাংলাদেশ দেখবে।’ তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ, চাঁদাবাজ ও দুর্নীতি মুক্ত রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে কাজ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। আমরা সর্বদা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত; তবে নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, যারা মনোনয়ন বাণিজ্য করতে চায় তারাই শুধু পিআর পদ্ধতি বুঝেন না। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীকে বিজয়ী করার মাধ্যমে একটি ফ্যাসিবাদ, সন্ত্রাসমুক্ত, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে সকল স্তরের নেতাকর্মী এবং দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে খুলনা-৬ আসনের পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউনিয়নের ঈদগাহ ময়দানে ১নং ওয়ার্ডে যুব ও সূধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান।

লস্কর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা মোজাফফর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা শামসুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার, জেলা ইউনিট সদস্য কাজী তামজীদ আলম, পাইকগাছা উপজেলা আমীর মাওলানা সাইদুর রহমান, সেক্রেটারি মো. আলতাফ হোসেন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি হাফেজ মাওলানা নূরে আলম সিদ্দিকী। অন্যান্যের মধ্যে পাইকগাছা উপজেলা কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুস সবুর, হিন্দু কমিটির নেতা আশুতোষ কুমার মন্ডল, বাবু স্বপন কুমার সানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শুক্রবার সকালে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার আল আমিন ট্রাস্টে পাইকগাছা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। উপজেলা আমীর মাওলানা সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মো. আলতাফ হোসেনের পরিচালনায় জেলা ইউনিট সদস্য কাজী তামজিদ আলম, মাওলানা শেখ কামাল হোসেন, অধ্যাপক আব্দুল মোমিন সানা ও এডভোকেট আব্দুল মজিদ, পাইকগাছা উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা বুলবুল আহম্মদ, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল খালেক, বায়তুলমাল সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মাওলানা নূরে আলম সিদ্দিকী, কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুস সবুর, উপজেলা ইউনিট সদস্য মো. আব্দুস সালাম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহকারী সেক্রেটারি মো. আসাদুল ইসলামসহ সকল ইউনিয়ন আমীর, সেক্রেটারিগণসহ উপজেলার সকল রুকনগণ উপস্থিত ছিলেন।

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। রুকনিয়াত কোনো পদ-পদবী নয়, এটি একটি মানের নাম। এটি আমাদের আল্লাহর রাস্তায় ও মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগের শপথ করায়। তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই দেশে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচন পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানের জোর দাবি জানানো হয়। দাঁড়িপাল্লার বিজয়ের লক্ষ্যে রুকনদের আপোষহীন ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, খুন, বনদস্যুতা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও চাঁদাবাজী রুখতে ন্যায়বিচারভিত্তিক শাসন জরুরি। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব। তবে বর্তমান বাস্তবতায় জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পিআর পদ্ধতি যুক্ত করা সময়ের দাবি। পিআর পদ্ধতি যুক্ত হলে সকল দলের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে, যা উন্নত বাংলাদেশ গঠনের পথ সুগম হবে। তিনি দলের সকল রুকনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যেন জনগণের মধ্যে ইসলামী রাজনীতির মর্মবাণী ছড়িয়ে দেন এবং ইসলামী সমাজব্যবস্থা কায়েমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।