বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যেগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন ও জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি সম্পর্কিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, দেশে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ঠেকাতে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন জরুরি।
গতকাল শনিবার সকালে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের কার্যালয়ে এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিভিন্ন পেশাজীবীরা অংশ নেন। এতে বক্তারা বলেন, পিআর পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে রাজনীতিতে পেশীশক্তির ব্যবহার, রাজনৈতিক দৃর্বৃত্তায়ন, কালো টাকার প্রভাব কমে যাবে। এছাড়া এ পদ্ধতিতে প্রত্যেক ভোটের প্রতিফলন সংসদে সঠিকভাবে ঘটে। একজন ভোটার যখন ভোট দেন, তিনি আশা করেন, তার মত বা আদর্শের প্রতিনিধিত্ব সংসদে থাকবে। কিন্তু বর্তমানে প্রচলিত ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট পদ্ধতিতে যিনি শুধু সবচেয়ে বেশি ভোট পান, তিনিই জয়ী হন। যদি একটি নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থী ৩৫ শতাংশ ভোট পান এবং বাকি ৬৫ ভাগ ভোট অন্যদের মধ্যে বিভক্ত থাকে, তবু তিনিই নির্বাচিত হন। এর মানে হচ্ছে, ৬৫ শতাংশ ভোটারের মতামত অবজ্ঞা করা হলো।
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর ড. মাওলানা কেরামত আলী। রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. শাহাদৎ হোসাইন ও অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুলের যৌথ সঞ্চালনায় বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাড. আবু মোহাম্মদ সেলিম, রাজশাহী সদর-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডাক্তার মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, লেখক ও সাংবাদিক সরদার আবদুুর রহমান, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক রাজশাহী সংবাদের প্রধান সম্পাদক ডা. নাজিব ওয়াদুদ, ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফাতেমা সিদ্দিকা, উপধ্যাক্ষ ডা. একেএম মহিউদ্দিন, প্রফেসর ইসমত আরা বেগম, অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ সভাপতি প্রফেসর জে এ এম সকিলুর রহমান, প্রফেসর ড. কামরুল আহসান, অ্যাড. হাসানুল বান্না সোহাগ প্রমুখ। বক্তারা আরো বলেন, জাতীয়ভাবে যদি কোনো দল ২০-২৫ শতাংশ ভোট পায়, কিন্তু তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা, বিত্তবৈভবের অভাব বা একক আসনে জেতার সক্ষমতা না থাকায় তারা একটি আসনও না পায়, তাহলে সেটি একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অস্বাভাবিক বলেই বিবেচিত হয়। পিআর পদ্ধতিতে এই সমস্যাগুলোর অনেকটাই সমাধান হতে পারে। এখানে প্রতিটি দলের প্রাপ্ত ভোটের হার অনুসারে সংসদে আসন বরাদ্দ হয়। ফলে ছোট দল, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, এমনকি নতুন রাজনৈতিক দলও সংসদে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পায়। এতে রাজনৈতিক বৈচিত্র্য বাড়ে এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের কণ্ঠস্বর সংসদে উঠে আসে।