রাজনীতি
ডা. শফিকুর রহমান
শিশু আছিয়া ইতিহাসের করুণ সাক্ষী হয়ে বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে গেলো
শিশু আছিয়া ইতিহাসের করুণ সাক্ষী হয়ে দুনিয়া ছেড়ে সারা বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চলে গেলো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার তার ভেরিফায়িট ফেসবুক পেজে এ মন্তব্য করেন তিনি।

শিশু আছিয়া ইতিহাসের করুণ সাক্ষী হয়ে দুনিয়া ছেড়ে সারা বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চলে গেলো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
আজ বৃহস্পতিবার তার ভেরিফায়িট ফেসবুক পেজে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি তার পোস্টে বলেন, ‘‘ শিশু আছিয়া ইতিহাসের করুণ সাক্ষী হয়ে আজ দুপুর ১.০০ টার দিকে দুনিয়া ছেড়ে সারা বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চলে গেলো। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন...।
আল্লাহ তা'য়ালা তাকে একান্ত প্রিয় হিসেবে কবুল করুন। জান্নাতে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা মেহেরবাণী করে দান করুন।
মানুষ নামের যে পশুরা তাদের পাশবিক লালসা চরিতার্থ করতে গিয়ে মা'সুম শিশুটির জীবনের আলো নিভিয়ে দিলো, এ পশুদের কঠিনতম ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। সর্বোচ্চ ৯০ দিনের ভিতরে (৯০ কর্ম দিবস নয়) এদের শাস্তি কার্যকর করতে হবে।
বিধ্বস্ত পরিবারকে কোন ভাষায় সান্ত্বনা দিব সে ভাষাটিই হারিয়ে ফেলেছি।
মহান রবের দরবারে দো'য়া করি, তিনি যেন তার পিতা-মাতাসহ আপনজনদেরকে নির্বিশেষে, বিবেকবান দেশবাসীকে এই শোক সহ্য করার তাওফিক দান করেন।
আসুন, মানুষ নামের এই প্রজাতির পশুদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যক্তিগত এবং সামাজিকভাবে, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। ধর্ষকদেরকে ঘৃণা করি ও বয়কট করি।’’
এর আগে, শিশুটির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ‘বাংলাদেশ আর্মি’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে জানানো হয়, ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দুপুর ১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে শিশুটি।
পোস্টে জানানো হয়, অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে, দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃদস্পন্দন ফিরে আসেনি।
এর আগে, প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছিল, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের দ্বিতীয় বার প্রায় ৩০ মিনিট সিপিআর দেওয়ার পর রিভার্স করেছে। ব্রেন ফাংশন করছে না। জিসিএস (কোমা) লেভেল ৩। রক্ত চাপ ও অক্সিজেন লেভেল অনেক কম।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) বোনের শ্বশুরবাড়ি মাগুরা শহরের নান্দুয়ালী এলাকায় বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৫০)-এর লালসার শিকার হয় শিশুটি। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার (০৭ মার্চ) রাতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তারপর তাকে নেওয়া হয় সিএমএইচে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার শিশুটির দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাসহ চারজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রোববার (০৯ মার্চ) রাত ১২টার দিকে মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিনের আদালতে শুনানি শুরু হয়। পুলিশ আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত এক নম্বর আসামি হিটু শেখকে ৭ দিন এবং সজীব হোসেন, রাতুল শেখ ও জাবেদা বেগমের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।