প্রধান উপদেষ্টার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্য কোনো দেশের থাবা মারার কোনো সুযোগ যেন না থাকে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন, হেফাজতে ইসলামসহ সাত দল ও সংগঠনের নেতাদের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে এসব কথা বলেছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচন আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। জীবনে কখনো ভোট দিতে পারেনি তাদের জন্য এই নির্বাচনে ভালো অভিজ্ঞতা দিতে হবে। যারা পূর্বে ভোট দিতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তাদেরও ভালো অভিজ্ঞতা দিতে হবে। কেউ যেন বলতে না পারেন আমাকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও উৎসবমুখ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলের কাছে তিনি পরামর্শ চেয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যত রকমভাবে পারে বাধা দিবে। বাংলাদেশের সত্তাকে গড়ে তুলতে তারা বাধা দিবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে, নির্বাচন বানচাল করার, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে, যাতে নির্বাচন না হয়। এগুলোর কিছু কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। সামনে আরও আসবে। এজন্য সতর্ক হতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে নির্বাচন করার এবং নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচিত সরকারের হাতে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব। এবারের নির্বাচন অনন্য নির্বাচন। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন নয়। এটা এ দেশের সব মানুষের, সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচন। এই নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা হল ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নির্মাণের। এই নির্বাচন হবে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর, সাহস অর্জনের, নিজের ভঙ্গিতে দেশ পরিচালনার নির্বাচন। এই নির্বাচনে যেন অন্য কোনো দেশের থাবা মারার কোনো সুযোগ যেন না থাকে। আমরা এই নির্বাচন আয়োজনে আপনাদের সর্বাত্মক সমর্থন চাই।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূস বলেছেন, প্রতি পদে পদে বাধা আসবে। সবার মনে দ্বন্দ্ব তৈরি করার চেষ্টা করবে। আমরা যেন সঠিক থাকি, স্থির থাকি। সবাই একসঙ্গে সহযোগিতা করি। তিনি আরও বলেন, সামনের দুর্গাপূজায় আমাদের সবার দায়িত্ব হলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা। অনেকে গণ্ডগোল তৈরি করতে চাইবে। তারা সব রকমের চেষ্টা করবে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

বৈঠকে অংশনেয়া সংগঠনটি হলো- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, জাতীয় গণফ্রন্ট ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এসব দল ও সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। গত রোববার (৩১ আগস্ট) বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন তিনি। তাদের সঙ্গে বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত আয়োজনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।