প্রস্তাবিত বাজেটে গুনগত কোনো পরিবর্তন দেখছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল রোববার বিকেলে বনানীর একটি হোটেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপরে নিজের প্রতিক্রিয়া এভাবে প্রকাশ করেন তিনি। আমির খসরু বলেন, আগে যেভাবে বাজেট চলে আসছে মূলত সেখান থেকে আমরা খুব বেশি সংখ্যার তারতম দেখছি না। ছোটখাটো কিছু এদিকে সেদিকে হয়েছে। বাজেটের যে প্রিন্সিপাল ওই জায়গায়টায় আমরা আগের মতো রয়ে গেছি। গুনগন দিক থেকে আমরা এই বাজেটে কোনো কিছু পরিবর্তন দেখি না। শুধুমাত্র সংখ্যার সামন্যতম কিন্তু ওই প্রিন্সিপাল একই রয়ে গেছে, ওদের যে কাঠামো সেটা একই রয়ে গেছে। এটা (এরকম বাজেট) আগামী দিনের সরকারের জন্য খুব একটা সহজ কিছু হবে না বলে ভবিষ্যৎবানী করেন তিনি।
সোমবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে অর্থ উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দেন।প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য কিনা এরকম প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, এখন আমাদের বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৩ পয়েন্ট ৫ বিলিয়নের মতো একটা ফিগার আছে। তাহলে আপনাকে ওইটা মাথায় রাখতে হবে, রাজস্ব আয়কে মাথায় রাখতে হবে। আপনি ওটাকে মাথায় রেখে যদি আমার মন্তব্য দিতে হয়, তাহলে বলব, এই বাজেটের সাইজটা (আকার) আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল। এটা একটা হাউজ-হোল্ডের মতো, হস্তের একটা ইনকামের মতো.. একই কথা তো, কোনো পার্থক্য নাই।
প্রস্তাবিত বাজেট কি গতানুগতিক বাজেট বলবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গতানুগতি শব্দটা আমি বলতে চাই না, আগে সরকারের ধারাবাহিকতা, অনেকটা সেই জায়গা থেকে বেরুতে পারেনি। আমির খসরু মনে করেন, রাজস্ব আয়কে ভিত্তি করেই আসলে বাজেট প্রনয়ন করা উচিত। তাহলে আপনার প্রাইভেট সেক্টারে মানিফ্লোটা থাকলো, বিনিয়োগ থাকলো এবং সুদের হার কমে আসলো, বিদেশ থেকে ঋণ কমে আসলো, বিদেশী ঋণের সুদ কম পরিশোধ করতে হবে, সেই জায়গা থেকে আমরা সরে আসতে পারি নাই। আমি মনে করি, মৌলিক জায়গায় গলদটা রয়ে গেছে? ’
রাজস্ব আয়ের সাথে বাজেটের আকারের সম্পৃক্ততা নেই মন্তব্য করে সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রত্যাশা সীমিত। কারণ হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ের ব্যাপার আছে, একটা নির্বাচিত সরকারের বাজেটের প্রতি এ্যাপরোজ যে দীর্ঘ সময় থাকার মেয়াদ এই ব্যবধানগুলো আমাদের বুঝতে হবে। এজন্য আমি মনে করি যে, প্রথমত যে আমি মনে করি যে, বাজেটেরর সাইজটা, বিগত সরকার যেভাবে বাজেটের আকার বাড়াতে বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেটার সাথে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের কোনো সম্পর্ক নাই।
সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি যখন রাজস্ব আয়ের পুরোটাই আপনার পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে চলে যাবে তাহলে আপনি উন্নয়ন বাজেটটা কিন্তু দেশের ভেতর থেকে দেশের বাইরে থেকে ধার বা ঋণ করে চালাচ্ছে তাতে যে সমস্যাটা হয় প্রথমত যে, সরকার যখন দেশের ভেতর থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেয়, তা ওভারঅল বাজেটকে ক্ষতিগ্রস্থ করে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে ব্যাংক সুদ বেড়ে যায়। আর দেশের বাইরের থেকে ঋণ নেয় তাতে ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে, দেশের মানুষকে এই ঋণ পরিশোধ করতে হয় বছরের পর বছর ধরে। ফলে এর কারণে দেশের উন্নয়ন কার্য্ক্রম সাফার করে। এসব কারণে বিনিয়োগ বাধা গ্রস্থ হয় ফলে কর্মসংস্থান হয় না, মানুষের আয় বাড়ে না। আমি মনে করি প্রস্তাবিত বাজেটে সেই বিষয়টা লক্ষ্য করে আমাদের রাজস্ব আয়ের সাথে বাজেটের সাইজের একটা সম্পৃক্ততা থাকা উচিত ছিল, আমি মনে করি সেটা হয়নি।
তিনি বলেন, রাজস্ব আয় যেটা আছে সেটা পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে চলে যাবে এবং পুরোটাই কিন্তু দেশের ভেতর এবং দেশের বাইরে থেকে ঋণ নিতে গেলে যে প্রভাবগুলো আমি বলছি এই প্রভাবের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আগের বাজেটের চেয়ে খুব বেশি সংখ্যার তারতম্য কিছু হয়েছে কিন্তু বাজেটের প্রিন্সিপল আগের জায়গায় রয়ে গেছি।