বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে দেড় ঘন্টা বৈঠক করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। গতকাল রোববার বিকালে গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিকাল ৫টা থেকে দেড় ঘণ্টা এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এলডিসি গ্রাজুয়েশন, শ্রম আইন সংশোধনসহ ব্যবসায় খাতে নানা সমস্যার বিষয়াদি নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা আলোচনা করেছেন।

বৈঠকে বিজেএমইএ‘র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের প্রধান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএ‘র সভাপতি এম এ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন(বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএ‘র মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির(ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিবের সাথে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক প্রমুখ।

বৈঠকের পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের বিজনেস কমিউনিটিতে যারা জড়িত আছেন তাদের প্রায় সকলে উপস্থিত। দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে যে বড় বড় ব্যবসায়ীরা আছেন তারা সবাই এখানে আছেন। তাদের আসার পেছনে দুটো কারণ আছে। একটা হচ্ছে আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন এবং আরেকটা লেবার ইস্যু-এটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগে আগামী যে সম্ভাবনা আছে সেটাকে প্রটেক্ট করার জন্য, রক্ষা করার জন্য আমাদের কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এই ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত উনাদের কথা শুনেছি, উনারা উনাদের সুবিধা অসুবিধাগুলো বলেছেন। এখান থেকে যেটা প্রতিমান হয় যে, এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বর্তমান এবং আগামী দিনে ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে না। কারণ বাংলাদেশ এখন একটা বড় ধরনের আপরাইজিংয়ের পরে আমরা এখন কিন্তু দেশটার অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য সকলে মিলে কাজ করছে, এটা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছে। বিগত দিনে এলডিসির গ্রেজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিসংখ্যানগুলো দেওয়া হয়েছিল এগুলো প্রশ্নবিদ্ধ আছে।

তিনি বলেন, সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য যদি আমরা অব্যাহতভাবে এগিয়ে যেতে চাই, যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি তাহলে এই মুহূর্তে এলডিসির গ্রাজুয়েশন স্থগিত রাখার বিষয়ে আমরা সবাই আলোচনা করেছি, এটা স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে। এ ব্যাপারে উনাদের এটাও মতামত দিয়েছেন যে, এই সরকার বর্তমানে এলডিসিরি বিষয়ে একটা চিঠি দেওয়া দরকার জাতিসংঘকে, বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে এখন রেডি আছে কিনা এই মুহূর্তে রেডি আছে কিনা? বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেন একটা চিঠি দেয় এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা এখানে এসে সরজমিনে দেখে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা আাছে কিনা এটা প্রত্যক্ষভাবে দেখার প্রয়োজনীয়তা আছে।

লেবার ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে আমীর খসরু বলেন, লেবার ইস্যুতে যে রেটিফিকেশনের ব্যাপারে উনাদের কোন সমস্যা নাই। কিন্তু অন্যান্য ইউনিয়নের নাম্বার নিয়ে যে বিষয়গুলো আছে সেখানে এই পরিবর্তনটা আনলে সত্যিকার অর্থে শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে কিনা এটা বিবেচনা করা দরকার কিংবা ইউনিয়নগুলো এফেক্টিভলি কাজ করতে পারবে কিনা এটাও বিবেচনা করা দরকার।

বিজেএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, আমরা বিজনেস কমিউনিটি আজকে আলোচনা করেছি। আমাদের অনেকগুলা বিজনেস কনসার্ন আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় কনসার্ন হচ্ছে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের ডেফারমেন্ট নিয়ে কথাবার্তা বলা, আরেক হচ্ছে লেবার ল’ এ্যামেন্ডমেন্ট। লেবার ল’ এ্যামেন্ডমেন্ট করতে আমাদের কোন আপত্তি নাই। আপনারা জেনে থাকবেন, ১২৪টা পয়েন্ট নিয়ে টিসিসিতে আলোচনা হয়েছে ১২৪টা পয়েন্টের মধ্যে আমরা ১২২টা পয়েন্টে একমত হয়েছি। যে দুইটা পয়েন্টে আমরা একমত হতে পারিনি এটার বাস্তব সম্মত কারণ আছে।

ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল : এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিবের সাথে গুলশানের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ‘ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল’ এর চিফ অব পার্টি ক্যাথেরিন সিছিল। তার সাথে ছিলেন ডেপুটি চিফ অব পার্টি আমিনুল এহসান এবং প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর আবদুল আলীম। এসময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।