ফাঁসি হত্যা গুম খুন করে ইসলামী আন্দোলন নিশ্চিহ্ন করা যায় না, পক্ষান্তরে ইসলামী আন্দোলন আরো বেগবান হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি গতকাল শনিবার বিকেলে পাবনা বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে পাবনা সদর উপজেলা ও পৌর জামায়াত আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে একথা বলেন।

পাবনা সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইব্রাহিম খলিল আইনুল ও পৌর জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি একরামুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৫ আসনের জামায়াত মনোনীতএমপি প্রার্থী প্রিন্সিপাল ইকবাল হোসাইন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাবনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বগুড়া অঞ্চলের টিম সদস্য ও সাবেক জেলা আমীর মাওলানা আব্দুর রহীম, বগুড়া অঞ্চলের টিম সদস্য নজরুল ইসলাম, পাবনা-১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল গাফফার খান, পাবনা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আবু সালেহ মোঃ আব্দুল্লাহ, মাওলানা আব্দুস সুবহানের পুত্র নেছার আহমেদ নান্নু, পাবনা পৌর জামায়াতের আমির উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পাবনা জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, পাবনা সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রব, পাবনা পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাকির হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আব্দুস সাত্তার, পাবনা সদর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির খন্দকার মাওলানা জাকারিয়া, পাবনা পৌর জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি এস এম ইদ্রিস আলী, পাবনা সদর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ওবায়দুর রহমান খান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবনা শহর শাখার সভাপতি গোলাম রহমান জয়, পাবনা সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি মো: আমানুল্লাহ।

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক সোনার বাংলার চেয়ারম্যান রফিকুন্নবী, বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আতাউর রহমান, পাবনা সদর উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা ময়েজ উদ্দিন, আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতে সাবেক আমির মাওলানা আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রধান অতিথি এটিএম আজারুল ইসলাম বলেন, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নৈতিকতায় পরিপূর্ণ থাকতে হবে। সংসার পরিচালনায় আয় ব্যয়ের হিসাব হারাম হালাল বিবেচনায় করতে হবে। ব্যক্তির চরিত্র উন্নত হলে দলীয়ভাবে সামগ্রিক নেতাকর্মীর চরিত্র উন্নত হবে, ইসলামী আন্দোলনের সহায়ক ভূমিকা হবে সর্বশেষ ইসলামী মূল্যবোধের সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।

প্রধান অতিথি এটিএম আজহারুল ইসলাম তার কারাগারের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি ফাঁসির জন্য প্রস্তুত ছিলাম, সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলাম কিন্তু আল্লাহতালার ইচ্ছাই আমার ফাঁসি কার্যকর হয়নি। আল্লাহতালা সর্বময় ক্ষমতার মালিক।

তিনি আরো বলেন, জামায়াতের নেতাকর্মীরা ফাঁসির ভয়ে দেশ ত্যাগ করেননি,বরঞ্চ নিশ্চিত সাজা শাস্তির কথা জেনেও মীর কাসেম আলী দেশে ফিরে এসেছিলেন।

ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না।

তিনি আরো বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে ইসলাম নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে আমাদের সিনিয়র নেতাদের ফাঁসি দিয়েছেন, কারাগারে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করেছেন তথাপিও কোন নেতাকর্মী আত্মসমর্পণ করেন নাই।

তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে দেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলেন পক্ষান্তরে আপনি নিজেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। দেশের মানুষ এখন আর আপনাকে চায়না।

তিনি দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে বলেন, ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীদের মৃত্যুকে জয় করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীদের সর্বপ্রকার নৈতিক চরিত্রের গুণে গুণান্বিত হতে হবে।

এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ইসলামী আন্দোলন কুরআন ও রাসূলের আদর্শের মাধ্যমে বিজয় হবে, এজন্য সকল নেতাকর্মীকে কুরআনের শক্তিতে বলিয়ান হতে হবে। সমাজের মানুষের মন জয় করতে হবে, তবে ইসলামের বিজয় আসবে।

প্রধানঅতিথি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের বিজয়ের জন্য প্রত্যেক নেতাকর্মীকে জান মালসহ সকল সম্পদ বিনিয়োগ করতে হবে। তাহলে ইসলামী আন্দোলন বেগবান এবং বিজয়ী হবে।

প্রধান অতিথি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সম্পদ ও সময় অধিক ব্যয় করে ইসলামী আন্দোলনের স্বপক্ষের প্রার্থীদের বিজয় আনতে পারলে একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, ইসলামী আন্দোলনের জন্য এখন অবারিত সুযোগ, এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। আগামী নির্বাচনে সুযোগের ব্যবহার করে পাবনার পাঁচটি আসনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।

সমাবেশ শেষে আমীরে জামায়াত ডাক্তার শফিকুর রহমানের শারীরিক সু¯’তা কামনা করে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন দোয়া পরিচালনা করেন।

সাঁথিয়ায় মাওলানা নিজামীর কবর জিয়ারত

পাবনার সাঁথিয়ায় সাবেক আমীরে জামায়াত শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর কবর জিয়ারত শেষে শনিবার দুপুরে দৌলতপুর ইমাম হোসেন একাডেমি মাঠে উপজেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজাহারুল ইসলাম বলেন, শহীদ নিজামীর অপরাধ এদেশে ইসলামী শাসন ব্যব¯’া কায়েম করতে চেয়েছিলেন। তিনি তার ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে আরো বলেন, জুলুম নির্যাতন করে ইসলামকে স্তব্ধ করা যায় না। তিনি দুটি মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে এক টাকারও দুর্নীতি এ পর্যন্ত কেউ প্রমাণ করতে পারিনি।

সাঁথিয়াবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মরহুম মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার দায়িত্ব এখন তার ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমিনের। তাই সাঁথিয়াবাসিকে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য দল মত নির্বিশেষে সকলকে আগামী সংসদ নির্বাচনে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেনের পক্ষে কাজ করার আহবান জানান।

সাঁথিয়া উপজেলা আমীর মোকলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল। প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন। আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক আব্দুর রহিম, জেলা জামাতের নায়েবে আমির আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফ্ফার খান , বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আতাউর রহমান প্রমুখ।

এর আগে সকালে ঢাকা- পাবনা মহাসড়কের সিএন্ডবি মোড়ে এটিএম আজহারুল ইসলাম এক পথসভায় বক্তব্য রাখেন। বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন পাবনা-১ (সাথিয়া -বেড়া) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন।