মানুষের কল্যাণই জামায়াতের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য, আর সে লক্ষ্যে আমরা সব সময় আপোষহীন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

তিনি গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীস্থ জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনিস্টিউট ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিশ্রুত ১ কোটি টাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বনানী থানা আমীর মিজানুর রহমান খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা-১৭ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা.এস এম খালিদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ডিরেক্টর ডা. শাহজাহান কবির। উপস্থিত ছিলেন ডা. হাসানুল বান্না, ডা.আ.সালাম,ডা.আব্দুল্লাহ ইউসুফ জামিল তিহান ও ডা.শরিফুল ইসলাম ও ডা. মিনহাজ উদ্দিন প্রমূখ।

মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ মানুষকে খলিফা হিসাবে দুনিয়াতে প্রেরণ করে সম্মানিত করেছেন। এজন্য কিছু দায়িত্ব দিয়ে তাদের শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কালামে হাকীমে ঘোষিত হয়েছে, ‘তোমরাই সর্বোত্তম জাতি। আর তোমাদেরকে মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। যারা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজকে নিরুৎসাহিত করে’। হাদিসে রাসূল (সা.)-এ বর্ণিত হয়েছে, ‘তারাই ভালো মানুষ, যারা মানুষের কল্যাণে নিবেদিত’। মূলত, জামায়াত একটি গণমুখী ও কল্যাণকামী রাজনৈতিক দল। আমরা মানুষকে কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য চর্চায় উদ্বুদ্ধ করি। একই সাথে পক্ষ থেকে ব্যক্তির চরিত্র পারফেক্ট করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমরা মানুষকে কর্জে হাসানা প্রদান করি। যাতে মানুষ সুদের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পায়। ক্যান্সার হাসপাতালে আমাদের সামান্য অনুদান সে কল্যাণকামীতারই ধারাবাহিকতা। আমরা এমন একটি ইনসাফপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করে জান্নাত লাভ ইসলামী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। অথচ একশ্রেণির বিরুদ্ধবাদীরা জামায়াত জান্নাতের টিকিট বিক্রি করে বলে অপপ্রচার চালায়। মূলত, আমরা নিজেরা যেমন জান্নাতে যেতে চাই, ঠিক তেমনিভাবে অন্যদেরকেও জান্নাতের দাওয়াত দিই। কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ি জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ করি। গুনাহ মাফের মাধ্যমে মানুষকে জান্নাতের পথে আহবান জানাই। মানুষকে শিরক ও বিদআতমুক্ত জীবন যাপন করতে অভ্যস্ত করে তুলি। আর ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়। তাই এদের সম্পর্কে সকলকে সতর্ক থাকবে হবে।

তিনি আরো বলেন, একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন নির্বাচন জিকির তুলেছে। তারা আর সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছেন না। তারা যেনতেনভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে চান। কিন্তু সচেতন জনতা তামাশার নির্বাচন কোন ভাবেই মেনে নেবে না। নির্বাচনের আগেই সংস্কার ও জুলাই সনদকে আইনী ভিত্তি দিতে হবে। এসবকে আইনী ভিত্তি না দেওয়া হলে অন্তর্বর্তী সরকার নিজেরাই অবৈধ হয়ে যাবে। যারা সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে অবশ্যই তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। আর আগামীতে স্বৈরাচার রুখবার জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে। তিনি আগামী নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও জুলাই সনদ লেখা, আইনী ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহবান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।