একদিকে ভারত আমাদের পানি দেয় না, অন্যদিকে বাংলাদেশের শত্রু হাসিনাকে তারা বসিয়ে রেখেছে।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চর পয়েন্টে তিস্তা রক্ষা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে এদিন একসঙ্গে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার বুকে মঞ্চ তৈরি, খাবার ব্যবস্থা, তাঁবু টানিয়ে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা এক কাতারে সামিল হয়েছেন শুকিয়ে যাওয়া তিস্তাকে রক্ষার দাবিতে।

অবস্থান কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, এটাকে আমরা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাব। মাওলানা ভাসানী যেমন তিস্তা রক্ষার আন্দোলন শুরু করেছিলেন, বহুদিন পর আজ আসাদুল হাবিব দুলু ভাই সেই আন্দোলন আবার শুরু করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের নিরপেক্ষ সরকার বলে, তাই ভারতের কাছে তিস্তার ন্যায্য পানি তাদের চাইতে হবে বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচন দিন। জনগণ অনেক বছর ভোট দিতে পারেনি। তাই জনগণ চায় ভোট দিয়ে নিজের প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠিয়ে, তাদের দ্বারা তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করাতে। অনেকে বলে, আমরা নাকি ভোট ভোট করি, ভোট হলে দেশে যে অস্থিতিশীলতা চলছে, তা বন্ধ হবে। জনগণ প্রতিনিধি পাবে তাদের কথা বলার।

তিনি আরও বলেন, আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে ন্যায্য পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দিতে হবে। সীমান্তে আমাদের নাগরিককে গুলি করে হত্যা বন্ধ করতে হবে।

কর্মসূচিতে আগত জনতার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, লড়াই না করে কিছু পাওয়া যায় না, লড়াই করে আমাদের অধিকারগুলো আদায় করব, ন্যায্য পাওনা বুঝে নেব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন নতুন লড়াই শুরু হয়েছে, সেটা হলো, বাঁচা মরার লড়াই, স্বাধীনতার লড়াই। জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই।

অবস্থান কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বাংলায় কথা আছে ঠেলার নাম বাবাজি! আজকের এই কর্মসূচি যখন ৬০ দিন আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, এরপর গত কয়েক দিন আগে ভারত পানি ছাড়া শুরু করেছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে ঘোষণা করতে চাই, যদি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না দাও তাহলে আমরা এককভাবে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করব। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের অধিকার আছে যেকোন সিদ্ধান্ত নেবার। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তিস্তার এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব।