বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর এবং গাজীপুর-৫ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোঃ খায়রুল হাসান বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে দেশের জনগণ যে ত্যাগ ও আত্মবলিদান দিয়েছে, তা যেন বৃথা না যায়— এজন্য জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। এই সনদ বাস্তবায়ন না হলে অভ্যুত্থানের সব অর্জন ব্যর্থ হয়ে যাবে।
আজ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের এক কালো অধ্যায় থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি, কিন্তু এর জন্য দিতে হয়েছে চড়া মূল্য। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের লগি-বইঠার নির্মম হত্যাযজ্ঞ, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারির বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারের মৃত্যু, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের তৌহিদী জনতার ওপর রাষ্ট্রীয় বর্বর হামলা এবং ঘুম, খুন, আয়না ঘরের ভয়াবহতা— সবকিছুই ছিল একদলীয় কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থান সেই ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমরা আর কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান দেখতে চাই না। এজন্য জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে, গণভোটের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিত করতে হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জামায়াতের কেন্দ্র ঘোষিত ৫ দফা দাবির প্রতি ইঙ্গিত করে খায়রুল হাসান বলেন, আমরা দাবি করছি— জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন আদেশ জারি, নভেম্বরে গণভোটের আয়োজন, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিবাদী গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার ও আওয়ামী দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল নিষিদ্ধ করতে হবে।
উপজেলা জামায়াতের আমীর মোঃ আফতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মোখলেছুর রহমান খান, উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা বদিউজ্জামাল, পৌর আমীর মাওলানা আমিমুল এহসান প্রমুখ। এছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে খোদেজা মার্কেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ৫ দফা দাবি মানতে হবে -জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কর— এসব স্লোগান দিতে থাকেন।