বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি কোন দলের বা মতের না। আপনি এবং আপনার সরকার ১৮ কোটি জনতার ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। তাই জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেই আগামী ১০ তারিখের মধ্যেই গণভোটের তারিখসহ সংস্কার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। অন্যথায় ১১ তারিখে সৃষ্ট যেকোন পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।

আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কাওরান বাজারে হাতিরঝিল জোন জামায়াত আয়োজিত ‘সাইফুল আলম খান মিলন সমর্থক গোষ্টি’র এক ব্যবসায়ী সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, যারা দেশে ফ্যাসিবাদের নতুন ভার্সন প্রতিষ্ঠা করতে চায় মূলত তারাই সংস্কার, জুলাই সনদ ও গণভোটের বিরোধীতা করছে। তাই তারা সংস্কারে না, সনদে না ও গণভোটে না সহ সকল কিছুতে না বলার অপসংস্কৃতি চালু করেছে। যারা সবকিছুতেই না বলছেন তারা এদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ টিকে রাখার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

তিনি বলেন, যারা সংস্কারের বিরোধীতা করছেন, তারা দেশে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, ঘুষ, দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজনীতি অব্যাহত রাখতে চায়। কিন্তু দেশ থেকে ঘুষ ও চাঁদাবাজী বন্ধ হলে রাজনীতিতে অসৎপ্রবণ ব্যক্তিদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি উপস্থিত ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কাউকে চাঁদা না দিয়ে চাঁদাবাজদের বেঁধে রেখে জামায়াতকে খবর দিবেন। আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণ সবদলকে ভোট দিয়ে আশাহত হয়েছে। তাই এবার দাঁড়িপাল্লা প্রতীতের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, মানুষের তৈরি আইন দিয়ে মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয়। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য সকলকে ইসলামী আদর্শের দিকেই ফিরে আসতে হবে। তিনি আসন্ন নির্বাচনে ঢাকা-১২ আসন থেকে সাইফুল আলম খান মিলনকে বিজয়ী করতে ব্যবসায়ী সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও তেজগাঁও থানা আমীর ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনের দাড়িপাল্লার প্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন।

সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, এ জমিন আল্লাহর। এখানে আইনও চলবে আল্লাহর।মূলত, আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠিত না থাকায় সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য মানুষের তৈরি আইনে পরিবর্তে সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মূলত, জামায়াতে ইসলামী একাজ করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে আমরা এমন এক ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করবো, যে রাষ্ট্রে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সারাদেশে জামায়াত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ময়দানে আপোষহীন ভূমিকা পালনের আহবান জানান।

উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জোন পরিচালক হেমায়েত হোসাইন, হাতিরঝিল পশ্চিম থানার ভারপাপ্ত আমীর নূরুল ইসলাম আকন্দ, শিল্পাঞ্চল থানা আমীর কলিম উল্লাহ, শেরেবাংলা নগর দক্ষিণের আমীর আবু সাইদ মণ্ডল, তেজগাঁও থানা উত্তরের আমীর হাফেজ আহসান উল্লাহ প্রমূখ।