কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে যশোরে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
যশোর জেলা জামায়াতে ইসলামী’র আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পিআর পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দুর্নীতি, জালিয়াতি বা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকবে না।
বক্তারা আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হলে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন জরুরি। এই পদ্ধতি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই জনগণের প্রকৃত মতামত ও ভোটের মূল্যায়ন সম্ভব। সরকারের একতরফা নির্বাচন পরিকল্পনা সফল হতে দেওয়া হবে না।
মানববন্ধনে বক্তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে হবে।
সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে হবে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। মতপ্রকাশ ও রাজনৈতিক কর্মকাÐে বাধা সৃষ্টি বন্ধ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে পুনর্গঠন করতে হবে।
অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, দেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার জরুরি। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে প্রত্যেক দলের প্রকৃত ভোটের অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। এটা জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি, আমরা এ দাবি আদায়ে রাজপথে থাকবো।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি মাওলানা আবু জাফর সিদ্দিক, সহকারী সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, মাওলানা রেজাউল করিম, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, জেলা প্রচার সেক্রেটারী শাহাবুদ্দিন বিশ্বাস, যশোর শহর আমির অধ্যাপক শামসুজ্জামান এবং জেলা কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক আবুল হাসেম রেজা প্রমুখ।
একই দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও প্রেসক্লাবের সামনেই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। সংগঠনটির জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মিয়া মো. আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা সোয়াইব হোসেন।
তিনি বলেন, সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণের মৌলিক সংস্কারকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। জুলাই মাসের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছে আমরা তা মেনে নেবো না। সংবিধানের অজুহাতে যেনতেন নির্বাচন জাতি কখনোই গ্রহণ করবে না। পিআর পদ্ধতিতেই হতে হবে আসন্ন নির্বাচন এটাই আজ জনগণের দাবি।
তিনি আরও বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না করে নির্বাচন কমিশন সরকারের স্বার্থে কাজ করছে। পিআর ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যে দলীয় অবস্থান নিচ্ছেন, তা গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক হুমকি।
মানববন্ধনে আরও আণ্যান্য সংগঠনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আইনজীবী পরিষদের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরু, এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আ. রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আশিক বিল্লাহ, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারি গাজী শহিদুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা সভাপতি মুফতি আবুজর বিন হাফিজ, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সভাপতি মাস্টার কামরুজ্জামান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সভাপতি মুফতি ইমরান হোসাইন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা একযোগে ঘোষণা দেন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন এবং সারাদেশে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবেন।