শ্রমিকরা জাতীয় উন্নয়নের চালিকা শক্তি হলেও তারা আজও নিগৃহীত, অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রধান উপদেষ্টা, গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজার উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

গত বৃহস্পতিবার সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত র‌্যালি পূর্ব বিশাল শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের গোলাপগঞ্জ পৌরসভা সভাপতি এনাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সেক্রেটারি রেজাউল করিমের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা উপদেষ্টা ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম, গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রধান উপদেষ্টা জিন্নুর আহমদ চৌধুরী, শ্রমিক নেতা মাওলানা আব্দুল খালিক, রেহান উদ্দিন রায়হান, হাফিজ আতিকুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার মুন্না, হাবিবুল্লাহ দস্তগীর, কাজি শাহিদুর রহমান, এহতেছামুল আলম জাকারিয়া ও আশরাফ আল মান্নান লিপু প্রমুখ।

সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশ ও জাতি গঠনে শ্রমিক সমাজের অসামান্য অবদান রয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধেও শ্রমিকরা ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু তাদেরকে কখনোই যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। মূলত, দেশের শ্রমিক সমাজ সহ সকল শ্রেণির মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শ্রেণি বিশেষ শ্রমিকদের ব্যবহার করে পাহাড় সমান অর্থ-বিত্তের মালিক হলেও তাদেরকে যথাযথভাবে মূল্যায়ণ করা হয়নি। নায্য পারিশ্রমিক থেকেও তারা বঞ্চিত হয়েছেন। তাই শ্রমিকদের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করতে অনতিবিলম্বে মজুরি কমিশন গঠন করে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকায় উন্নীত করতে হবে। এছাড়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবা, দুর্ঘটনাজনিত প্রণোদনা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। শ্রমিকদের সন্তানরা যাতে সম্মানজনকভাবে সমাজে পড়ালেখা করে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য সরকারকে নিতে হবে আন্তরিক পদক্ষেপ। তিনি মালিকদের উদ্দেশ্য বলেন, শ্রমিক ছাটাই না করে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিন। তাহলে দেখবেন শ্রমিকদের যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি ও আপনাদের উৎপাদনে গতিশীলতা আসবে। তিনি অধিকার আদায়ে শ্রমিকসমাজকে সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, মূলত দেশে ইসলামী শ্রমনীতি না থাকায় শ্রমিক সমাজ আজ অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। তাই দেশের শ্রমিক সমাজসহ সকল শ্রেণির মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। তিনি শ্রমিকদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, শ্রমিকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। পরিবহন শ্রমিকরা পথেঘাটে চাঁদাবাজির শিকার হোন। তাই শ্রমিক নিগ্রহ, হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি সিলেটের চা-শ্রমিকদের নায্য অধিকার নিশ্চিত করতে একটি নতুন পরিকল্পনা সহ ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অন্যথায় শ্রমিক সমাজ অধিকার বঞ্চিতই থেকে যাবে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।