চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, ঈদুল আজহা শুধু আনন্দের নয়, এটি আত্মত্যাগ ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মহা উপলক্ষ। এই ত্যাগ-ভিত্তিক ইবাদতে রয়েছে গরিব-দুস্থ মানুষের অধিকার; তাদের জন্য বরাদ্দ কোরবানির গোশত এবং অবহেলিত একটি অংশ: পশুর চামড়া। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কোনোভাবে যাতে এই চামড়া পাচার হতে না পারে এবং দেশীয় ব্যবসায়ীরা যথাযথ মূল্য পায় সে ব্যাপারে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দালাল চক্র যাতে সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় নগর জামায়াতের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোকে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি ছুটি শুরু হওয়ার আগেই তৈরি পোশাকসহ সব খাতের শ্রমিকদের উৎসব ভাতা বা বোনাসসহ বেতন পরিশোধ করতে হবে।
শাহজাহান চৌধুরী আরও বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের মতো আসন্ন ঈদুল আজহায়ও যাতে দেশবাসী স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন ও কোরবানি করতে পারে সেজন্য দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করতে হবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গড়ে ওঠা বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া, সুনির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির কাছে যাতে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি না থাকে সেজন্য কোরবানি পশুর হাট মনিটরিং, নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং ভোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাসহ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির পশুর হাটে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়। তবে শঙ্কার বিষয় হচ্ছে ঈদকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠে জাল টাকা কারবারিরা। ব্যাপারীদের যাতে সর্বস্ব হারাতে না হয় সেজন্য পশুর হাটগুলোতে বিভিন্ন ব্যাংকের ‘জাল নোট শনাক্তকরণ ও ক্যাশলেস লেনদেন বুথ’ স্থাপন করতে হবে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, নগর জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি, চট্টগ্রাম-২ আসনে (ফটিকছড়ি) জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনূস ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম-১০ আসনে (পাঁচলাইশ, খুলশী, পাহাড়তলী ও হালিশহর) জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-৯ আসনে (বাকলিয়া-কোতোয়ালী-চকবাজার) জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, অধ্যাপক মুহাম্মদ নূর, প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোছাইন, অধ্যাপক মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, আমির হোছাইন, ফখরে জাহান সিরাজী প্রমুখ।
দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে জামায়াত : চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, জলাবদ্ধতা চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি দুঃখ। দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর জন্য এটা একটি জটিল সমস্যা। বিশেষ করে বর্ষাকাল আসলে অল্প বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে নগরী। সরকারের একার পক্ষে এই কঠিন সমস্যা সমাধান করা কষ্টকর। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে নগরীর বাকলিয়া বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে আসছে। নগরবাসীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করার লক্ষ্যে সোমবার খাল খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ছিদ্দিকুর রহমান, বাকলিয়া থানা জামায়াতের আমির সুলতান আহমদ, জামায়াত নেতা আ ন ম জোবায়ের, ডা. মুহাম্মদ ইলিয়াছ, মুহাম্মদ ইয়াছিন, মাওলানা মুজিবুর রহমান প্রমুখ।