বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা জুলাইকে হারিয়ে যেতে দেবো না বরং জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করেই সামনের দিকে এগিয়ে যাবো-ইনশাআল্লাহ। তিনি ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে দলমত নির্বিশেষে সকল ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
শনিবার (১০ মে) মধ্যরাতে মগবাজার চৌরাস্তায় এক পথ সভায় আগত নেতা-কর্মী ও সমবেত জনতার উদ্দেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় পথসভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দীন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও ইয়াসিন আরাফাত, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমূখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের মাধ্যমে আমাদের প্রাণের দাবির আংশিক পূরণ হয়েছে। তবে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। জুলাই প্রোক্লেমেশন এখনো আসেনি। বিপ্লবের পূর্ণাঙ্গ ঘোষণা এখনো পাইনি। তবে আমাদেরকে ধৈর্যের সাথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা জুলাইকে কোন ভাবেই হারিয়ে যেতে দেবো না বরং তা দেশ, জাতি, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যথাযথভাবে কাজে লাগাবো।
তিনি আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা শহীদ পরিবারের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। তারা সরকারের কাছে কোন আর্থিক সহযোগিতা চায় না বরং তারা দ্রুততার সাথে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার চায়’। তিনি উৎফুল্ল জনতার উদ্দেশে বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে জনগণের দাবির আংশিক পুরণ হয়েছে। তারা আশা করে বর্তমান বিপ্লবী সরকার জনগণের আবেগ- অনুভূতি ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে যৌক্তিক সকল দাবি পুরুণ করবে। তিনি দায়িত্ব পালনে সরকারকে জনগণের প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহবান জানান।
তিনি বলেন, এ সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। কারণ, তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনগণ দেশে নতুন করে স্বৈরাচার বা ফ্যাসীবাদ চায় না বরং তারা শান্তি চায়। চায় বৈষম্যমুক্ত ও আইনের শাসনের সমাজ। তাই বর্তমান সরকারকে সকল প্রকার ভয়ভীতি ও চোখ রাঙানীকে উপেক্ষা করে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদ এবং তাদের দোসরদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। পূরণ করতে হবে জনগণের সকল নায্য দাবি। খুনীদের বিষয়ে দেখাতে হবে শূণ্য সহনশীলতা। জনগণ অবিলম্বে খুনীদের শাস্তি দেখতে চায়।
তিনি সরকারকে সকল প্রকার আবেগ-অনুভূতি, অনুরাগ-বিরাগের ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষভাবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। জনগণ আপনাদেরকে চিরদিন গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।