গাজীপুরের কালীগঞ্জে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার জেরে দায়ের করা মামলার পর এবার জামায়াতের ২৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার কালীগঞ্জ থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি মো. আলা উদ্দিন। এছাড়া প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান। ওসি আরো জানান, মামলা হওয়ার পর আসামীরা গা ঢাকা দিয়েছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সাড়ে আটটার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের মধ্য খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় জামায়াতের ইফতার মাহফিল চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন অন্তত পাঁচজন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনজনকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় জামায়াতের পক্ষ থেকে ১৩ জন হামলাকারী সন্ত্রসীর নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করা হলেও এখনো কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। অথচ শনিবার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের বাশাইর গ্রামের আব্দুর রহমান জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেন, যা জামায়াত নেতৃবৃন্দ ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন।
গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমীর ড. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মো. খায়রুল হাসান এবং জেলা সেক্রেটারি মো. শফিউদ্দিন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, "বিএনপির এই হামলায় আমাদের ৮-১০ জন কর্মী আহত হন। অথচ প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার না করে উল্টো নিরপরাধ জামায়াত কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হয়রানির শামিল।"
তারা আরও বলেন, "উক্ত ঘটনায় ন্যায়পরায়ণ মহল নিন্দা জানালেও প্রশাসন এখনো হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। বিএনপি নিজেদের দোষ ঢাকতে জামায়াতের নিরপরাধ কর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।"
জামায়াত নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, "বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের মতো একই পথ অনুসরণ করছে। ফ্যাসিবাদী কৌশল প্রয়োগ করে তারা প্রকৃত দোষীদের আড়াল করছে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে মিথ্যা মামলা ও হয়রানির পথ বেছে নিচ্ছে।"
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, "এই ঘটনায় ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ২৪-এর জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের চেতনাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, অবিলম্বে জামায়াতের নিরপরাধ কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।"