আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে জয়ের আশা ব্যক্ত করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। তার মতে, বর্তমানে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে। শেষ পর্যন্ত সব স্বাভাবিক থাকলে এবং সুস্থ ধারার রাজনীতি নিশ্চিত করা গেলে ছাত্রশিবির ইনশাআল্লাহ ভালো ফল করবে। পূর্ণ প্যানেল নিয়ে আমরা কাক্সিক্ষত ফলাফল আশা করছি।

গতকাল শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরে মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে ঠাকুরগাঁও শহর শিবির আয়োজিত জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাদ্দাম বলেন, ডাকসুর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে ২৫ আগস্ট থেকে প্রচারণা শুরু হবে। “এখন পর্যন্ত পরিবেশ সুন্দর। প্রার্থীরা প্রচার চালাচ্ছে। তবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ওপর নির্যাতন ও হামলার নজির আছে। তাই শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে,” বলেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সংগঠনের সিনিয়র নেতারা ছাত্রদের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। তাদের একজন বলেছেন, “কিসের ডাকসু, কিছু হবে না।” তার ভাষায়, এ ধরনের মন্তব্য আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং সন্দেহ জাগায় যে, নির্বাচন ভণ্ডুল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সাদ্দাম অভিযোগ করেন, কিছু বাম ও অন্যান্য সংগঠন একজোট হয়ে প্রায়ই ছাত্রশিবিরকে ঘিরে মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে। “তারা আলোচনা বা সভায় শিবিরবিরোধী ট্যাগিং, ফ্রেমিং ও বুলিংয়ে বেশি মনোযোগ দেয়। অথচ বাস্তবে তাদের অবস্থান দুর্বল।

তারা দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসিত করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর ছাত্রদল ও শিবির একসঙ্গে আন্দোলনে নামলে তারা সেটিকে ‘জঙ্গি আন্দোলন’ বলে আখ্যা দিয়েছিল।

সাদ্দাম বলেন, “শিবির কেন রাজনীতি করতে পারবে না? এটি বৈধ সংগঠন। সরকারের নিয়ম মেনে আমরা গণতান্ত্রিক পথে রাজনীতি করছি। অথচ আমাদের বৈধতাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাম সংগঠনগুলো শিবিরকে ‘গণহত্যাকারী’ তকমা দেয়, অথচ তাদের জন্মলগ্নেই রয়েছে ব্যাংক লুট, থানা লুট ও সন্ত্রাসের ইতিহাস।

অনলাইনে অপপ্রচার ও নারী সদস্যদের হয়রানি ডাকসু নির্বাচন ঘিরে অনলাইনে অপপ্রচার চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। “বামরা বলছে শিবিরের ‘বট বাহিনী’ আছে। অথচ তারাই ভুয়া বাহিনী তৈরি করে বুলিং করছে। আমাদের প্যানেলে যেসব মেয়েরা আছে, তাদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য ও যৌন হয়রানির মতো অপপ্রচার চলছে,” বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. দেলাওয়ার হোসেন। তিনি বলেন, “বর্তমান প্রজন্মকেই দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও সৃজনশীল চিন্তা ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়।” ভবিষ্যতে এই দেশ ও জাতিকে তোমরাই নেতৃত্ব দিবে। এজন্য নিজেদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনের জন্য শিবির সব সময় তোমাদের পাশে থাকবে।

ঠাকুরগাঁও শহর শাখার সভাপতি আমজাদ হোসেন সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মতিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিবিরের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক আরমান হোসেন, বিশিষ্ট মেডিসিন

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষা উপকরণ ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।