বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য ও গণ-প্রত্যাশা শীর্ষক এক সেমিনার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমীনের সঞ্চালনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মোহাম্মদ ইউনুস, মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ডা. একেএম ফজলুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর সম্মানিত প্রভাষক মসরুর হোসাইন, চট্টগ্রাম-১১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর শফিউল আলম, ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী, নগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইব্রাহীম রনি।

প্রবন্ধ উপস্থাপনে নজরুল ইসলাম বলেন, 'জুলাই বিপ্লব বা 'জুলাই অভ্যুত্থান' যে নামেই ডাকা হোক না কেন সেটা ছিলো দীর্ঘ দেড় যুগের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানে ছাত্র-শ্রমিক জনতার স্বতঃস্ফূর্ত গণ বিস্ফোরণ। এ আন্দোলনে অবদান রয়েছে সকল শ্রেণি- পেশার, জেন্ডার বা বয়স, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের। ছাত্ররা এ আন্দোলন শুরু করলেও ক্রমেই এটি গণরূপ নিয়েছে এবং এক পর্যায়ে গণ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এটি ছিলো শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত নিরস্ত্র ও নিরিহ মানুষের গণ আন্দোলন যা পরাস্ত করেছে ফ্যাসিবাদ তোষণকারী রাষ্ট্রের সকল সশস্ত্র বাহিনী ও কাঠামোকে। জুলাই বিপ্লব ২০২৪ সফল হওয়ার পেছনে কৃতিত্ব পাওয়ার হকদার হচ্ছে দু'সহস্রাধিক শহীদ, হাজারো পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণকারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা এবং হাজার হাজার নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। শহীদেরাই হচ্ছে বিপ্লবের আসল নেতৃত্ব দানকারী প্রধান মাস্টার মাইন্ড। দল-মত ও ধর্ম-বর্ণের উর্ধ্বে উঠে সকল শহীদেরাই আমাদের নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করেছে। তারাই অতীতের গ্লানি মুছে ফেলে নতুনভাবে বৈষম্যহীন ইনসাফপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথ দেখিয়েছে। তাই শহীদেরাই জুলাই বিপ্লবের রাহবার। বাংলাদেশের অনন্য সাধারণ এ আন্দোলনটি ২০২৪ সালের ৫ জুন থেকে ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) পর্যন্ত অগণিত প্রাণ বিসর্জন দেয়ার মধ্য দিয়েই সফলতার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল।

সেমিনারে বক্তারা আরও দাবি করেন, নতুন প্রজন্ম ইতিহাসকে নতুন চোখে দেখছে এবং মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে বিভাজন সৃষ্টি করা আর সম্ভব হবে না। জুলাইয়ের আন্দোলন তাই একটি নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা করেছে।সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ছিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান এলাহী, অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোছাইন, ফখরে জাহান সিরাজি সবুজ, আমির হোসাইন, থানা আমীর ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব হাছান রুমি, খালেদুল আনোয়ার, এম এ গফুর, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মনজারে খোরশেদ প্রমুখ।