বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে বলেন, জাতীয় স্বার্থ ও শ্রমিক স্বার্থ সমন্বয় করে জনগণকে অবহিত করেই চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা করতে হবে

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে একটি নতুন টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানিকে সম্পৃক্ত করা এবং একটি চালু টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনা ও বিতর্ক আমাদের নজরে এসেছে। চার গুণ ফি বৃদ্ধির বিষয়ে বন্দর সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারের আপত্তি-অভিযোগের বিষয়েও আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্দরে ধর্মঘট এবং অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছে যা খুবই উদ্বেগজনক।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর শুধু চট্টগ্রামের নয়। সারা বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র এটি। দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রায় নব্বই ভাগ এ বন্দর দিয়েই পরিচালিত হয়। কাজেই বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বন্দরটির ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ, শ্রমিকদের অধিকার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির সমন্বয় সাধন এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক দরপত্রের (রহঃবৎহধঃরড়হধষ পড়হঃৎধপঃ নরফফরহম) নীতিমালা অনুসরণ করে জনগণকে অবহিত করেই চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা করতে হবে।

নগর জামায়াত আমীর নজরুল ইসলাম বলেন কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ সহ প্রযোজ্য অন্যান্য আইন বিবেচনায় নেয়া জরুরি। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর আলোকে চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য বন্দরের শ্রমিক নিয়োগ, মজুরি, নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন, ক্ষতিপূরণ এবং কর্মপরিবেশসহ এবং সামগ্রিক শ্রম-ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলিকে সুন্দরভাবে সমন্বয় না করলে শ্রম অসন্তোষ এবং অচলাবস্থা সৃষ্টির দায় কে নেবে? ইতোমধ্যে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (ঘঈঞ) বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদী হয়েছে। দেশীয় শ্রমিক ছাঁটাই এবং জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে তারা সরব হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন তো শ্রমিকদের অধিকার ও দাবি আদায়ের আইনগত কাঠামো; এটাকে রুদ্ধ করা তো সঠিক হবে না।বন্দরকে দেশীয় ব্যবস্থাপনায় রাখা এবং প্রয়োজনে প্রকাশ্য দরপত্রের মাধ্যমে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের দাবিকে পাশ কাটানোর সুযোগ নেই। দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের ছদ্মাবরণে রাজনৈতিক গোলামী মেনে নেয়ার মতো আশঙ্কা তৈরি করতে পারে।

তিনি বলেন, কাজেই জাতীয় স্বার্থ ও শ্রমিক স্বার্থ সমন্বয় করে জনগণকে অবহিত করেই চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এ বিষয়ে শৈথিল্য প্রদর্শনের সুযোগ নেই।