জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে উক্ত মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুল আহসান এমরুলের সভাপতিত্বে ও সহকারী সেক্রেটারি আনোয়ার হাসান সুজনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশ পরিচালিত হয় আইনের মাধমে। আইন ছাড়া কোন রাষ্ট্র চলতে পারে না। আর সর্বোচ্চ আইন হচ্ছে সংবিধান। বাংলাদেশ চলে সংবিধানের ভিত্তিতে। সংবিধানের কোন শূন্যতা যখন সৃষ্টি হবে তখনই একটা সংকট তৈরি হয়। বাংলাদেশ বহুবার সাংবিধানিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। ইতিহাস ঐতিহ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ বর্তমানের একটি রাজনৈতিক ও আইনী জটিলতার মধ্য দিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। ৫ আগস্ট যখন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলো এবং পার্শ্ববর্তী একটি রাষ্ট্রে আশ্রয় নিলো। ৫-৮ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন সরকার ছিলো না। এখানে সাংবিধানিক কোন কর্তৃপক্ষ ছিলো না। এই সময়টি রাষ্ট্রের দেখাশোন ও আইন শৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয়, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেখানে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দায়িত্বটি পালন করেছে। ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের কর্মী সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষরে প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অবিসংবাদিত নেতা ডাঃ শফিকুর রহমান গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ অবস্থানরত বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাকমর্কতারদের সামনে প্রথমে জাতির সামনে সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন। এই সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে প্রথমে ছিলো ১০ দফা। তারমধ্যে একটি বিষয় তিনি উল্লেখ করেছিলেন বাংলাদেশের ৫৪ বছরের নির্বাচন পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি নির্বাচনও সুষ্ঠ হয়নি শুধু মাঝখানের তিনটি বাদ দিয়ে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১। এই তিনটি নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের মাধ্যমে হয়েছিলো এবং সঠিক নির্বাচন হয়েছিলো। এই তিনটি নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে যারা হেরে গিয়েছিলেন তাদের দ্বারা। অতএব প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন হওয়ার লক্ষ্যে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থায় একটা সংস্কার হওয়া দরকার। পদ্ধতি একটু পরিবতর্ন হওয়া দরকার। এরই প্রেক্ষিতে তিনি পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব রেখে ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, পিআর পদ্ধতির ব্যাপারে বাংলাদেশে বিভিন্ন জরীপে উঠে এসেছে । বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমর্থন করেছে। ঢাকসু, জাকসু নির্বাচন হওয়ার পর জ্যামিতিক হারে জামায়াতে ইসলামীর জনসমর্থন বেড়েই চলেছে এবং বিএনপি’র কমেছে। এই হিসেবে যদি উল্লেখ করা হয় জামায়াতে ইসলামী সহ ২৬ দলের পেছনে সমর্থন আছে এটা যদি আমরা ধরি তাহলে বিএনপি যদি ৩৫% সমথর্নে থাকে পাবলিকের তাহলে ৬৫% জন সমথর্ন থাকে অন্য সব দলের। সুতরাং ৬৫% জনসমর্থনের রাজনৈতিক দল যে মতকে সমর্থন দিচ্ছে সেটাকে আইনে রূপান্তর করে নির্বাচনে যাওয়ার আইনি বাধাটা কোথায়!

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আসাদুজ্জামান সোহেল, সহ-সেক্রেটারি মাহবুবুল হাসান শামীম, শূরা ও কর্মপরিষদ খন্দকার আবু হানিফ, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারী, সাংগঠনিক থানা শাখার আমীর ও সভাপতি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।