বাংলাদেশে ‘পাকিস্তানপন্থা’ বলে কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইন্ডিয়ান রেটোরিক জুলাই ঐক্যে নতুন বিভেদ উসকে দিবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান মিডিয়া হরহামেশা বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতাকে ‘পাকিস্তানপন্থী’ বলে ফ্রেমিং করে।এইমুহূর্তে ভিন্নমতাবলম্বীদের ‘পাকিস্তানপন্থী’ ট্যাগ দেয়ার মানে ইন্ডিয়ান ন্যারেটিভ এদেশে পুনরুজ্জীবিত করার নামান্তর। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এ ধরনের ইন্ডিয়ান রেটোরিক ঢালাও ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে দমন ও হত্যা করতে আমরা দেখেছি। আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ-উত্তর বাংলাদেশে আবারও সেই আত্মঘাতী পশ্চাদমুখী রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আমরা ফিরতে চাই না। এখন যেকোনো ইন্ডিয়ান রেটোরিকের চর্চা জুলাই ঐক্যে নতুন বিভেদ উসকে দিয়ে ইন্ডিয়ান আধিপত্যবাদকে সুযোগ করে দিতে পারে। আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান করছি।
তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এদেশের আলেম-ওলামা ও মুসলমান সবসময়ই জুলুম ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বঞ্চিত মুসলমানের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষার্থে সাতচল্লিশ ঘটেছিল। এরপর পাক সামরিক জান্তার জুলুম ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে একাত্তরের জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। সেই ধারাবাহিকতায় চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে এদেশে ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের পতন ঘটে। সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ প্রতিটি আমাদের সংগ্রামী ইতিহাস ও জাতীয় আত্মপরিচয় নির্মাণের অনিবার্য ভিত্তি। এর প্রতিটি নিয়েই ইন্ডিয়ার মুসলিমবিদ্বেষী ন্যারেটিভ হাজির রয়েছে, যা আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। কোনটিকে অস্বীকার নয়, বরং ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের ইতিহাস ও রাষ্ট্র পুনর্নির্মাণে প্রতিটিকে ধারণ করতে হবে।
ইসলামাবাদী বলেন, ফ্যাসিবাদী আমলে ইন্ডিয়ান রেটোরিক ও ন্যারেটিভ ব্যবহার করে এদেশের শীর্ষ ইসলামপন্থিদের ওপর বিচারিক হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। এর পুনরাবৃত্তি আর কখনো হতে দেয়া যাবে না। এদেশে ‘পাকিস্তানপন্থা’ বলে কিছু আছে বলে আমরা মনে করি না। বাংলাদেশপন্থি শক্তিশালী রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ প্রশ্নে একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।