বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতি জেগে উঠেছে। ফ্যাসিবাদের সব চিহ্নকে এই জাতি নিশ্চিহ্ন করে দেবে। আজকে জাতি ঐক্যের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে ফ্যাসিবাদ যত শক্তিশালী হোক, যত আক্রমণাত্মক হোক, যত খুন আর গুম করুক, যতগুলো আয়নাঘর তৈরি করুক, যতগুলো ক্রসফায়ার করুক; কোনো কিছু দিয়ে তাদের শেষ করা সম্ভব হয় না। এই জাতি যখন জেগে ওঠে, তখন আর তাদের দমাতে কেউ পারে না। ‘যুব বিভাগ মানব উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আজকের যুবকরাই আগামী দিনে দেশে নেতৃত্ব দেবে। মূলত সুশাসনের অভাবেই আমাদের দেশের যুব সমাজের মধ্যে অবক্ষয়ের জয়জয়কার শুরু হয়েছে। যুবসমাজের একটি বৃহৎ অংশ আজ মাদকাসক্ত। জামায়াতে ইসলামী মাদকমুক্ত দেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে আমাদের যুব সমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের অবক্ষয়িত যুব সমাজের ধর্মীয় শিক্ষা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে নিরলসভাবে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে যুব দিবস উপলক্ষে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের উদ্যোগে যুব সম্মেলন ও বর্ণাঢ্য র্যালিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
খুলনা মহানগরী যুব বিভাগের সভাপতি মু. মুকাররম আনসারীর সভাপতিত্বে ও মুশাররফ আনসারীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম।
শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, অফিস সেক্রেটারি মিম মিরাজ হোসাইন, আ স ম মামুন শাহীন, ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা আলমগীর, খুলনা মহানগরী ইসলামী আন্দোলনের যুব বিভাগ সভাপতি আব্দুর রশিদ, খালিশপুর থানা আমীর আব্দুল্লাহ আল মামুন, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর জি এম শহিদুল ইসলাম, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর প্রমুখ। পরে এক বিশাল র্যালি শহীদ হাদিস পার্ক থেকে শুরু হয়ে পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরীঘাট মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তাদের শরীরে বিভিন্ন রংয়ের টি শার্ট শোভা পাচ্ছিল। আর মুখে শ্লোগান ছিল, আগামীর বাংলাদেশ ইসলামের বাংলাদেশ, আগামীর বাংলাদেশ যুবকদের বাংলাদেশ, আগামীর বাংলাদেশ চাঁদাবাজমুক্ত বাংলাদেশ, আগামীর বাংলাদেশ মাদকমুক্ত বাংলাদেশ। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল যুবকদের নৈতিক ও আত্মিক উন্নয়ন, চারিত্রিক গঠন, নেতৃত্ব বিকাশ এবং ইসলামী আন্দোলনের বর্তমান প্রেক্ষাপটে করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান।
মাস্টার শফিকুল আলম বলেন, যুবকরা হলো একটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, তাই যুব সমাজকে মাদকের থাবা থেকে রক্ষা করে সুন্দর সমাজ গঠনের দায়িত্ব নিতে হবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যুব বিভাগকে। ৫২র ভাষা আন্দোলন, ৭১র মুক্তিযুদ্ধ সর্বশেষ ২৪ এর স্বৈরাচার পতনে সামনে থেকে এই যুবকরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। তাই যুবকরা যেন কোন ভুল পথে না যায় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। সামনে ইসলামী সমাজ বিনিমার্ণে যুবকদের ভূমিকা অনিস্বীকার্য। তাই যুবকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মুকাররম আনসারী বলেন, যুবসমাজ যেকোনো দেশের মূল্যবান সম্পদ। জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি যুব সমাজের সক্রিয় অংশ গ্রহণের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। যুবসমাজের মেধা, সৃজনশীলতা, সাহস ও প্রতিভাকে কেন্দ্র করেই জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হয়। ফলে যেকোনো পরিস্থিতিতে সাহসিকতা, হিকমত ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, সংগঠনের নির্দেশনা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত আনুগত্যের মূর্ত প্রতীক হতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের সুফল দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে ছাত্র-জনতার পাশাপাশি যুব সমাজকে রাজপথে বলিষ্ঠ ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে।